বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনের সোনার হরিণ দেখা না দিলে ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দেখা দিবে না। এই দেশে আন্দোলনে জিতলে নির্বাচনেও জয়ী হওয়া যায়। ষড়যন্ত্র করে, কাউকে হত্যা করে ক্ষমতা পাওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটরিয়ামে ‘পিতার শোক, কন্যার শক্তি বাংলার অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন গবেষক, ইতিহাসবিদ ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
সভায় ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের সঞ্চালনা করেন।
এতে বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৩ বছর ধরে কত শুনলাম, রোজার ঈদের পরে, কুরবানির ঈদের পরে, দেখতে দেখতে ১৩ বছর। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায়, পদ্মা-মেঘনা নদীতে কত পানি গড়িয়ে যায়। কিন্তু ফখরুল সাহেবদের আকাঙ্ক্ষিত আন্দোলনের সোনার হরিণ দেখা যায় না। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দিল্লি দূর অস্ত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, কষ্ট প্রকাশ করে কী করবেন? শেখ হাসিনাকে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন। তিনি ভাগ্যবতী। আল্লাহ এই দেশে একজনকে সৃষ্টি করেছেন স্বাধীনতার জন্য, আরেকজনকে সৃষ্টি করেছেন মুক্তির জন্য। শোককে শক্তিতে পরিণত করে মুক্তির লড়াইয়ের আপসহীন কাণ্ডারি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাত দিন কষ্ট করে কাজ করে অনেক কিছু অর্জন করেছেন শেখ হাসিনা। এই অর্জন দেখে হিংসায় জ্বলে উঠেন। কষ্ট করেন, দরিয়া আরও তরঙ্গময় করেন, আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। অনেক চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশকে শ্রীলংকা বানানোর জন্য, লাভ হয়নি। এখনো আমাদের রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়নের কাছাকাছি। গত ছয় মাসে যত রেমিট্যান্স এসেছে এর আগের ছয় মাসেও তা আসেনি। বৈশ্বিক আর্থিক পরিস্থিতির মূল্য বাংলাদেশকে দিতে হচ্ছে।
সুদিন আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা মানুষের কষ্ট বোঝেন। সরকারপ্রধান হয়ে তিনি প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘মানুষ কষ্ট করছে’। এই কষ্ট লাঘবে তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই কষ্ট সাময়িক, এই দুর্দিন চলে যাবে। সুদিন আবার আসবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গত ১৫ তারিখ খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক কাটা হয়নি। পরের দিন দোয়া অনুষ্ঠান করা হয়েছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ, তার জন্য দোয়া করা যেতেই পারে। কিন্তু এই অনুষ্ঠানের উপলক্ষ্য ছিল জন্মদিন। যার প্রধান অতিথি ছিলেন মির্জা ফখরুল সাহেব। একটা মানুষের কতগুলো জন্মদিন হতে পারে?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চেয়েছিলাম একটা মানুষের (খালেদা জিয়া) কয়টা জন্মদিন। উনি তার উত্তর দেননি। সর্বশেষ করোনা টেস্টের সময় তার (খালেদা জিয়া) জন্মদিনের ষষ্ঠতম জন্ম তারিখ দেখা গেছে। মানুষের সঙ্গে তামাশা, নাটক আর কত দিন করবেন ভুয়া জন্মদিন পালন করে। আমি আবারো এই প্রশ্নের জবাব জানতে চাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের রক্তস্রোত আমরা ভুলিনি। আইভি রহমানসহ বহু নেতাকর্মীদের রক্ত আমরা ভুলে যাইনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত হামলা চালিয়ে আমাদের নেত্রীকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। পরে এফবিআইয়ের তদন্তও স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান বলেছিলেন, ‘আমরা হাওয়া ভবনের সিগন্যাল পেয়ে হামলা চালিয়েছি’।
তিনি আরও বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘটিয়েছে। জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাহস পেত না।