ক্ষমতায় আসতে না আসতেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়ে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। প্রায় দেড় মাস আগে দায়িত্ব নেওয়ার পরে দেশের আর্থিক সংকট লাগাম টানতে ব্যর্থ হবার কারণে লিজ ট্রাস এখন নিজ দলের মধ্যেই বিদ্রোহের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের উদ্বৃতি নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টায় নামছেন ব্রিটিশ আইন প্রণেতারা। এরিমধ্যে ট্রাসের কাছে সে ধরনের বার্তাও পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাউনিং স্ট্রিটের সতর্কতার পরও ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা এই সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করবেন বলে ডেইলি মেইল জানিয়েছে। এর ফলে আবার সাধারণ নির্বাচনের দিকে যেতে পারে ইউরোপের প্রভাবশালী এই দেশটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাসের নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টির শতাধিক আইনপ্রণেতা তার প্রতি অনাস্থার চিঠি দলীয় কমিটির প্রধান গ্রাহাম ব্র্যাডিকে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। দলীয়ভাবে অনাস্থা আনতে এই শতাধিক এমপি গ্রাহাম ব্র্যাডিকে তাগাদা দেবেন।
তবে গ্রাহাম ব্র্যাডি এই পদক্ষেপে বাধ সাধছেন বলে জানা গেছে। তার যুক্তি, নবনিযুক্ত চ্যান্সেলর অর্থাৎ ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টের সাথে আগামী ৩১ অক্টোবরের বাজেটে অর্থনৈতিক কৌশল নির্ধারণের সুযোগ পাওয়ার যোগ্য লিজ ট্রাস। এরপরই তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হোক।
ব্রিটেনের আরও বেশ কিছু গণমাধ্যম জানিয়েছে, কিছু আইনপ্রণেতা ট্রাসকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এবং তার স্থলে নতুন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে গোপনে আলোচনা করেছেন। ট্রাসের মেয়াদ বড়জোর আর এক সপ্তাহ বলে মনে করছেন অনেকেই।
কর কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত মাসে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌঁড়ে জয়ী হন লিজ ট্রাস। তবে সেসব কর্মসূচির মূল অংশকে বাদ দেয়ার পর এখন নিজের রাজনৈতিক জীবন বাঁচিয়ে রাখার জন্য কার্যত লড়াই করছেন তিনি।
কনজারভেটিভ দলের একাংশ কিন্তু তেমনই মনে করছে। আর এতেই আবার ভেসে উঠছে ঋষি সুনাকের নাম। সুনাক তার সমর্থকদের জানিয়েও দিয়েছেন, প্রস্তাব এলে প্রধানমন্ত্রী হতে তিনি ইচ্ছুক। ফলে তাকে আবারো নির্বাচনের ময়দানে দেখা যাবে, সেটি অনেকটাই নিশ্চিত।
লিজ ট্রাস ক্ষমতাচ্যুত হলে আবারো সাধারণ নির্বাচনের দিকে যেতে পারে দেশটি। ব্রিটেন দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক সংকটে জর্জরিত। ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে এই সংকটের কারণেই ব্রিটেন তিনজন প্রধানমন্ত্রীকে হারিয়েছে।