জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে গেলেও নিজেদের সার্ভার দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটির কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, ‘এনআইডি চলে গেলেও ভোটর সার্ভার দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা কাউকেই দেওয়ার সুযোগ নেই। এটা ইসির সম্পদ। তবে আমরা তথ্য শেয়ার করতে পারি। এনআইডি স্বরাষ্ট্র চলে গেলে তারা তথ্য ব্যবহার করতে চাইলে দেওয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এনআইডি অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকার নিয়ে নিলে আমরা ভোটার কার্ড দেব।এনআইডি চলে গেলে ইসির কোনো ক্ষতি হবে না। এনআইডি এক জিনিস, ভোটার কার্ড এক জিনিস। ইসি কাজ করে ভোটার তালিকা নিয়ে। এনআইডির ভিত্তিতে সংস্থাটি নির্বাচন করে না। তারা ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন করে।’
ইসি আলমগীর আরও বলেন, ‘এনআইডি চলে গেলে এটার নাম দেব ভোটার আইডি। ভোটার যারা তারা আমাদের কাছ থেকে কার্ড পাবেন। এনআইডি কার্ড হিসেবে তো আমরা বানাইনি। আমরা তো বানিয়েছি ভোটার কার্ড হিসেবে। আমাদের সার্ভার আমাদের কাছেই থাকবে। এই সার্ভার আমরা কারো কাছে হস্তান্তর করব না। এটা নিয়ে যারা বুঝে তারাও বলে, যারা না বুঝে তারা বলে।’
সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এনআইডির জন্য নতুন আইন হচ্ছে। এটি পাশ হলেই এনআইডি নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবে এবং জন্মের পরপরই নাগরিককে এনআইডি দেওয়া হবে।
ভোটার তালিকার বাই প্রোডাক্ট হিসেবে ইসি ২০০৮ সাল থেকে এনআইডির কাজ করে আসছে। এ জন্য সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবরা পরামর্শ দিয়েছেন এটি ইসির কাছেই থাকুক।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবা ও সব ধরনের কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। গত ১০ অক্টোবর ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন আইন, ২০২২’ এর খসড়া শর্তসাপেক্ষে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একইসঙ্গে ওই খসড়া আইনে আবারও সংশোধনী আনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ খসড়া সংশোধনী ২০১০ সালের আইনের আদলে করতে বলা হয়। এতে কমবেশি ৩২টি ধারা থাকবে।
এ আইন পাশ হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের কাছে চলে যাবে। তখন জন্মের পর থেকেই শিশুদের এনআইডি দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন সুরক্ষা বিভাগের ডাটাবেজ থেকে তথ্য নিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করতে পারবে অথবা নিজেরাও পৃথকভাবে ভোটার তালিকা করতে পারবে। তবে আইনটি পাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশনের কাছেই থাকবে।