বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী দল। তাই অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে তার আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, মন্ত্রী-এমপিদের পদত্যাগ করতে হবে। ভোট হতে হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, সাফ কথা বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে, তবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো পাতানো নির্বাচনে যাবে না, যাবে না।
শনিবার রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিভাগীয় বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে। দলের চেয়ারপারসন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিদেশ থেকে ফিরতে দিচ্ছে না।’
‘সারা দেশে দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের নির্যাতন করা হচ্ছে, অনেককে খুন-গুম করা হয়েছে। অনেকই বাড়িঘর ছাড়া। তাই ভোট চোর এই আওয়ামী লীগের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। তারা দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, দেশের মানুষকে চিবিয়ে খাচ্ছে, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করছে। তাই এদের আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না। আজ এই রংপুরের কালেক্টরেট মাঠ থেকে নেতাকর্মীদের শপথ নিতে হবে। প্রস্তুত হতে হবে। এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ, এই রংপুর অঞ্চলের মানুষ আজ ভালো নেই। সারা দেশে খাদ্য সংকট, চিকিৎসা সংকট চলছে। চাল-ডাল-তেল, ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে। মানুষ না খেয়ে থাকছে। বিদুৎ থাকছে না। কৃষকরা সার পাচ্ছে না, ফসলের দাম পাচ্ছে না। মানুষ কষ্টে আছে। আর আওয়ামী মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা আরাম-আয়েশ করছে। তারা এসিতে থাকছে। এই টাকা কই থেকে আসছে। দুর্নীতি-চুরি ও লুটপাটের কারণে তারা টাকার পাহাড় গড়ছে।’
নিত্যপণ্যের দাম ও দুর্ভিক্ষ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১০ কেজির চাল খাওয়াতে চেয়ে আওয়ামী লীগ এখন ৯০ টাকার চাল খাওয়াচ্ছে। চিনি-তেল, সাবানসহ সব কিছুর দামও বেড়েছে। শাকসবজিও মানুষ কিনতে পারছে না। এটা দুর্ভিক্ষের লক্ষণ। এর দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ কাজ পাচ্ছে না, অনেকেই চাকরি হারাচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য পুঁজি হারাচ্ছে। প্রতিটি পদে পদে দুর্নীতি, লুটপাট ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হচ্ছে। মানুষের ভোটাধিকার ছিনেয়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্যাতন করা হচ্ছে। সবক্ষেত্রেই একটা অরাজকতা বিরাজ করছে। তাই এই লুটেরা, ঘুসখোর, ভোট চোর ও দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাদের আর রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষকে জেগে উঠতে হবে। আর একবার দেশকে স্বাধীন করতে হবে।’