রাজধানীর হাজারীবাগ একটি বাসা থেকে মা ও শিশু সন্তানসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাজারীবাগ শেরে-বাংলা-নগর রোডের গদিঘর এলাকা থেকে মা ও দুই শিশু সন্তানসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- হাসিনা বেগম (২৭), সাদিয়া (৩) ও ৭ মাস বয়সী শিশু সন্তান সিয়াম। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সাদ্দাম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
নিহত হাসিনার বড় ভাই মনির হোসেন বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আমার বোনের স্বামী তাকে মারধর শুরু করে। প্রতিনিয়ত তাকে মারধর করতো। বিয়ে হয়েছে দীর্ঘ ৮ বছর হলো। এ ৮ বছর ধরে তার স্বামী তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। কিন্তু তারপরও আমার বোন মুখ খুলে আমাদের কাছে কোনো কিছু বলতো না। আজকে বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা এসে দেখি আমার বোনের সন্তানসহ তার লাশ পড়ে আছে। আসলে আমার বোনকে মেরে লাশ টানিয়ে রাখা হয়েছে, নাকি আমার বোন গলায় ফাঁস দিয়েছি তা আমরা জানি না।
যদি আমার বোন গলায় ফাঁস দিয়ে থাকে তাহলে তার স্বামীর নির্যাতনের কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। এটা আত্মহত্যা না, এটা একটা হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় আমরা অবশ্যই মামলা করব। আমার বোন ও ভাগ্নে ভাগ্নি হত্যার বিচারের জন্য যতদূর যাওয়া দরকার আমি যাব। এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।
তবে বাড়ির মালিক রমজান আলী বলেন, তারা আমার বাসায় উঠেছে মাত্র দু-মাস হলো। এর মধ্যে তাদের কোনো ঝগড়া বিবাদ আমার চোখে পড়েনি। আজকে সন্ধ্যায় তার বড় ছেলে সালমান কোচিং থেকে বাসায় ফিরে বাসার দরজা নক করতেছিল। অনেকক্ষণ ধরে বাসার দরজা নক করার পরও যখন দরজা খুলছিল না। তখন পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশি রানা ছাঁদে গিয়ে তার মাকে ডাকতে গিয়ে দেখে ছেলেটির মা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে আশপাশের সবাইকে খবর দিলে সবাই এসে তার ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে ভিতরে দুই শিশুর লাশ পড়ে আছে। এ সময় তার স্বামীকে ফোন দিলে সে দ্রুত বাসায় ছুটে আসে। এসেই তার তিন বছর বয়সী মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আমরা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে লাশগুলো উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানার ওসি একে সাইদুল হক ভূইয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আমরা লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।