বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার এবং সরকারের এজেন্টরা যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে, তা দমন করার জন্য, নস্যাৎ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করবে। সেজন্য তারা বিভিন্ন রকমের গল্প তৈরি করবে। এজন্য আমরা এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামাচ্ছি না। আমাদের মাথা ঘামানোর বিষয় হচ্ছে একটাই সেটা হচ্ছে জনগণকে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ করে, আরও সম্পৃক্ত করে এই ভয়াবহ দানবকে সারানোর, এর বাইরে আমাদের কোনো চিন্তা নেই।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকারের পতনের লক্ষ্যে আমরা যে গণআন্দোলন শুরু করেছি, সেই আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিএনপি আমাদের পূর্বের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। এছাড়া পরবর্তীতে কি কর্মসূচি গ্রহণ হতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।
যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দলের সঙ্গেও অতি দ্রুত বৈঠক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি যে কর্মসূচি রয়েছে সেই কর্মসূচিকে সফল করা এবং পরবর্তীতে কি কর্মসূচি গ্রহণ করব সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রকে উদ্ধার করার জন্য, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য এবং দেশকে সত্যিকার অর্থে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলনে যারা মারা গেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি, এছাড়া যারা বন্দি রয়েছেন তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি এই আন্দোলনে সবাই যেন শরিক হন। সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রকে মুক্তি করার লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরও বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি করে যেন লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি সেই ব্যাপারে একমত হয়েছি।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের যে কর্মসূচি তা গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য কাজ করছি। আমরা চারটি কর্মসূচি পালন করেছি। কর্মসূচিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ধীরে ধীরে এই কর্মসূচি বিজয়ের দিকে নিয়ে যেতে চাই। কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এ ব্যাপারে আমরা নীতিগত এবং কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঐক্যকে আরও দৃঢ় করা। এই ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর জন্য, বিভ্রান্ত সৃষ্টি করার জন্য শত্রুপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সজাগ থাকা এবং ঢাকা মহানগরে মধ্যে কীভাবে তৎপরতা বাড়ানো যায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ঢাকা মহানগরে বিএনপি যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আমরা এটাকে সমর্থন জানিয়েছি। এটার মধ্য দিয়ে আমরা সে পর্যায়ে যাওয়ার চেষ্টা করব যাতে একটি অভ্যুত্থানের দিকে নিয়ে যেতে পারি। ৪ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির পর পরবর্তী ধাপে কি কর্মসূচি দিতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বরকত উল্লাহ বুলু ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জোটটির লিয়াজোঁ কমিটি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম।