কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান ২১৬ নম্বর কক্ষে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রেয়সী সানাকে আসন বরাদ্দ দেন। ওই ছাত্রী গত শনিবার বিকেলে কক্ষে উঠতে গিয়ে দেখেন, সেখানে রায়হানা আনজুম নামের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী থাকছেন। বিষয়টি প্রেয়সী হল প্রাধ্যক্ষকে জানালে তিনি দুজনকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে আনেন। এরপর সেখানে হাজির হন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মাহজাবিন।
প্রাধ্যক্ষ পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্রীর কাছে জানতে চান, ‘আপনি কিভাবে হলে উঠলেন?’ তখন ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমাকে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তুলেছেন।’
ছাত্রলীগ নেত্রী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, ‘আমি তাঁকে তুলেছি। এতে সমস্যা কী?’ কিভাবে হলে তুলেছেন, প্রাধ্যক্ষ এর কারণ জানতে চাইলে ফাইজা বলেন, ‘যাকে যেভাবে খুশি সিট দেব, আপনি কে? আমি হল ছাত্রলীগের সভাপতি। হলে আমার কথায় সব চলবে।’
এ সময় হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ আল-আমিন ও কক্ষ বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থী প্রেয়সী সানা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা দুজনই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, এ ঘটনায় তাঁরাও হতবাক হয়েছেন।
তবে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাজী ফাইজা মাহজাবিন। তিনি বলেন, ‘সিনিয়র দেখে পদার্থবিজ্ঞানের ওই ছাত্রীকে আমি হলে তুলেছি। প্রভোস্ট (প্রাধ্যক্ষ) স্যারকে বলেছি, মেয়েটির সিট দরকার। এ জন্য হলে আছে।’
প্রাধ্যক্ষ সাহেদুর রহমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “হলে কোন শিক্ষার্থী উঠবেন আর কোন শিক্ষার্থী উঠবেন না, সেই এখতিয়ার সম্পূর্ণ হল প্রশাসনের। একজন শিক্ষার্থী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। অথচ ফাইজা নামের শিক্ষার্থী আমাকে বলেছেন, ‘যাকে যেখানে খুশি সিট দেব, আপনি কে?’”
ফাইজা মাহজাবিন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর হলেও পরিবার কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকায় থাকে। গত বছরের ২৭ জুলাই যাতায়াত সমস্যা, আর্থিক সমস্যা ও নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে হলে থাকার জন্য আবেদন করেন তিনি। এরপর হলে উঠে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
কুবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া, সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, শৃঙ্খলাহীনতা ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত থাকার কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।