রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিবাদে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলানোর পাশাপাশি সিনেট ভবনের পাশে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারকে ঘিরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত রাবি উপাচার্যসহ জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুন্নবী সামাদীকে সেখানে ঘিরে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার জবাব দিতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে এদিন সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর মিছিল সারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্লোগানে উত্তপ্ত করে তোলেন ক্যাম্পাস।
পরে বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বাসভবনে বসে এসে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ফলপ্রসূ সমাধান না পেয়ে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘিরে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে বিনোদপুর বাজারে যেতে চায়। তবে বিনোদপুরের বিভিন্ন মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেননি।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় আগামী ১২ ও ১৩ মার্চ সব ক্লাস-পরিক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১১ মার্চ রাতে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।
এর আগে মোহাম্মদ নামের এক বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অন্তত ২৫-৩০টি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় অন্তত ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে রামেকে ভর্তি আছেন।