শনিবার , ১১ ডিসেম্বর ২০২১ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, বের করা হলো ৬৪৮ দিন পর

প্রতিবেদক
ukadmin
ডিসেম্বর ১১, ২০২১ ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মনিরা খাতুনের (১৯) পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ২০২০ সালের ৩ মার্চ। সে সময় ভুলে তার পেটে একটি কাঁচি রেখেই সেলাই করে দেন চিকিৎসক। এরপর কেটে গেছে ৬৪৮ দিন। পেটে এ কাঁচি নিয়েই বেঁচে ছিলেন মনিরা। দীর্ঘ এ সময় পর শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ওই হাসপাতালেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়েছে।

মনিরা খাতুন গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের বাসিন্দা খাইরুল মিয়ার মেয়ে।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ মার্চ ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ ইউনিট-২ এ ভর্তি ও অস্ত্রোপচার হয় মনিরার। রক্তের দলাজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই সময় তার পেটের মধ্যে চিকিৎসকদের অজ্ঞাতসারে ওই কাঁচিটি রেখে সেলাই করা হয়।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ওই তরুণীর ভাই মো. কাইয়ুম জানান, অস্ত্রোপচারের আগে আট দিন এবং অস্ত্রোপচারের পরে ৯ দিন তার বোন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অস্ত্রোপচারের কয়েক দিন পরই মনিরাকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পৈলানপট্টি গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরও তার পেটে ব্যথা ছিল। এরপর অন্তঃসত্ত্বা হয়। পরে মনিরার পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী।

তিনি জানান, এরপরও বিভিন্ন গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু তার পেট ব্যথা কমেনি। ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে প্রায় দুই বছর ধরে চাপিয়ে রাখেন পেট ব্যথা। গত দুদিন আগে তার পেটে অসহনীয় ব্যথা উঠলে বুধবার (৮ ডিসেম্বর) মুকসুদপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। ওই ক্লিনিকে এক্স-রের মাধ্যমে চিকিৎসক দেখতে পান মনিরার পেটের মধ্যে একটি কাঁচি রয়েছে। 

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) তাকেকে ফরিদপুর নিয়ে আসা হয়। এখানে এসে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আবার এক্স-রে করা হলে ওই একই জিনিস পাওয়া যায়।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মনিরার অস্ত্রোপচার করা হয়। এতে অংশ নেন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহা, সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিন ও রেজিস্ট্রার সালেহ মো. সৌরভ। তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়।

অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহা বলেন, ‘তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। মনিরার জ্ঞানও ফিরেছে। দীর্ঘদিন কাঁচিটি পেটের মধ্যে থাকায় পেটের নাড়ি পেঁচিয়ে যায় এবং একটি নাড়িতে পচন দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রোগী নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ৭২ ঘণ্টা না গেলে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

গত বছর অস্ত্রোপচারের সময় কাঁচিটি পেটে রয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি করা হবে। কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য