সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় আজ (সোমবার-৩১ জানুয়ারি)। এজন্য সকাল ৭টা থেকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নারী পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে সাদা পোশাকের বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, উক্ত মামলার আসামি ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ১৫ আসামিকে সকালে আদালতে নিয়ে আসার কথা থাকলেও দুপুরে আনা হবে। তবে আদালতের একটি সুত্র জানিয়েছে, সিনহা হত্যা মামলার রায় সকালে দেওয়ার কথা থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আদালত প্রাঙ্গণের সামনে গিয়ে দেখা যায়, দায়রা জজ কোর্ট এলাকার চারদিকে প্রতিবন্ধকতা (ব্যারিকেড) দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে কক্সবাজার জেলা পুলিশ আদালতে প্রবেশের একটি ফটক পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আদালতের কর্মীরাও ওই ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। সকাল ৭ টায় থেকেই আদালত এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। পুলিশের পাশাপাশি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার দলও তৎপর রয়েছে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ৬ আগস্ট ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার আসামি সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিন বাসিন্দা, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও ওসি প্রদীপের দেহরক্ষীসহ আরও সাত জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি কনস্টেবল সাগর দেবের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে আলোচিত এই মামলার ১৫ আসামির সবাই আইনের আওতায় আসে। পাশাপাশি সিনহা নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে অতিরিক্ত ডিআইজি এবং লে. কর্নেল মর্যাদার একজন সেনা কর্মকর্তাকে সদস্য করে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়।