উদ্ধারকর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টাতেও বাঁচানো গেলো না মরক্কোর শিশু রায়ানকে। পাঁচ দিন ১০৪ ফুট গভীর কুয়ায় আটকে থাকার পর বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় তার নিথর দেহ কুয়া থেকে বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা। মরক্কোর রাজার বরাত দিয়ে এ খবর নিশ্চিত করেছে এপি, আরব নিউজ ও আল জাজিরা। রায়ানের মৃত্যুর সংবাদ দিয়ে মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে মরক্কোর চেফচাওয়েন প্রদেশের ইঘরান গ্রামে নিজেদের বাড়ির কাছে একটি গভীর কুয়ায় পড়ে যায় রায়ান। ঘটনার প্রথম থেকেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের চোখ ছিল উত্তর আফ্রিকার মরক্কোর উদ্ধার তৎপরতার দিকে
পরিকল্পনা মোতাবেক শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শিশুটিকে বের করে আনতে জোরেশোরে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা। বুলডোজার, ক্রেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। লক্ষ্য ছিল একটাই, আজই শিশু রায়ানকে যে করেই হোক বের করে আনা। কারণ গভীর কুয়ায় ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল রায়ান। এর আগে, দড়ি দিয়ে কিছু শুকনো খাবার, পানি এবং অক্সিজেনের মাস্ক পৌঁছানো হয় শিশুটির কাছে।
উদ্ধার কাজের নেতৃত্বে থাকা আবদেলহাদি টেমরানি এর আগে জানিয়েছিলেন, ছেলেটির অবস্থা সম্পর্কে জানা খুব কঠিন। কিন্তু আমরা খুব আশাবাদী। কুয়ায় পাঠানো ক্যামেরায় দেখা গেছে সে একপাশে শুয়ে আছে।
বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছিল, উদ্ধারকর্মীরা শিশুটিকে মাত্র দুই মিটার দূরে আছেন। টেমরানি জানান, রায়ানের কাছে পৌঁছাতে আর মাত্র দুই মিটার খনন করতে হবে। আশা করি আমরা কোনও পাথরের মুখে পড়বো না।
কুয়ার গর্তের প্রস্থ ছিল মাত্র ৯.৮ ইঞ্চি। ফলে কাজে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীনে পড়তে হয়। এজন্য পাশেই বিশাল গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। তবে সামান্য ভুলে ভূমিধসে সব প্রচেষ্টা শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই সতর্ক অবস্থানে থাকতে হয় সবাইকে। গভীরতার কারণে অন্ধকারের আলো জ্বালিয়ে দিন-রাত কাজ করেন উদ্ধারকর্মীরা। এতে নেতৃত্বে দেয় মরক্কোর বেসামরিক সুরক্ষা অধিদফতর।
সূত্র: এপি, আল জাজিরা, আরব নিউজ