এলপিজির ৯৮ শতাংশই আমদানি
** আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়ছে দাম
** ২৮ প্রতিষ্ঠানের দখলে এলপিজির বাজার
** সরকারি এলপিজিএল সিলিন্ডারের দাম ৫৯১ টাকা
বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ছে এলপিজির দাম। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাবে বাড়ছে এ জ্বালানির দাম। বর্তমানে এলপিজির অন্যতম উপাদান প্রোপেনের দাম প্রতি মেট্রিক টন ৮৯৫ ডলার এবং বিউটেন ৯২০ ডলার। এ মূল্য গত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছর এ সময়ে দাম ছিল এক-তৃতীয়াংশ কম।
২০২১ সালের মার্চে প্রতি মেট্রিক টন প্রোপেনের দাম ছিল ৬২৫ ডলার এবং বিউটেন ৫৯৫ ডলার। করোনা মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালের এপ্রিলে এলপিজির দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়। ওই মাসে প্রোপেন ২৩০ ডলার এবং বিউটেন ২৪০ ডলার ছিল। এলপিজির বিশ্ববাজারে সৌদি আরামকোর মূল্য অনুযায়ী বিশ্বে এলপিজির দাম নির্ধারিত হয়।
এদিকে চলতি মার্চে বেসরকারি খাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির মূল (ভ্যাটসহ) এক হাজার ২৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৩৯১ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ মূল্য কার্যকর হয়েছে।
জানা গেছে, দেশীয় বাজারে ভোক্তাপর্যায়ে গত নভেম্বরে ১২ কেজির এলপি গ্যাসের দাম সর্বোচ্চ এক হাজার ৩১৩ টাকা করা হলেও পরের মাসগুলোতে কমে যায়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে কমলেও ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ২৪০ টাকায়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার আরও এক দফা বাড়িয়ে এক হাজার ৩৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠান এলপিজিএলের সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম এখনো ৫৯১ টাকা।
জানা গেছে, এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরামকো। এটি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। সৌদি সিপিভিত্তি মূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে থাকে বিইআরসি। ৩৫ অনুপাত ৬৫ হিসাবে প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ করার পরে মূল্য একই হওয়ার কারণে গড়মূল্যও একই দাঁড়ায়।
সৌদি সিপির মূল্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২০ সালের শুরুতে বৈশ্বিক অতিমারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে লকডাউনে স্থবির হয়ে পড়ে সারা বিশ্ব। ২০২০ সালের এপ্রিলে ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে নামে এটি। ওই মাসে প্রোপেন প্রতি টন ২৩০ ডলার এবং বিউটেন ২৪০ ডলারে বিক্রি হয়। তবে পরের মাসেই দাম বেড়ে প্রোপেন-বিউটেন দুটির দামই ৩৪০ ডলারে উঠে যায়। এরপর দাম বাড়তে বাড়তে গত বছরের নভেম্বরে সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে উঠে। ওই মাসে প্রোপেন ৮৭০ ডলার এবং বিউটেন ৮৩০ ডলারে দাঁড়ায়। পরে দুই মাস কমলেও আবার বাড়ে দাম। গত এক মাসে প্রতি টন প্রোপেনের দাম বেড়েছে ১২০ ডলার এবং বিউটেনের দাম বেড়েছে ১৪৫ ডলার।