বাংলাদেশে বেশি বেশি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে চর্চা প্রয়োজন উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তার সমস্ত জীবন উৎসর্গ করেছেন বাঙালি জাতির জন্য। একজনমে তিনি পঞ্চাশ জনমের কাজ করে গেছেন।
তিনি বলেন, একজন বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বহু বছর ধরে বাঙালি জাতিসত্তা নির্যাতন, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ও অপমানের শিকার হয়েছে। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি কাটিয়েছেন জেলের অভ্যন্তরে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থের পাঠ ও কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, বাঙালির ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে যদি আমরা প্রশ্ন করি, কেন আমরা ৫০০ কিংবা ২০০ বছর আগে স্বাধীন হয়নি। এর উত্তর একটিই। কারণ, সে সময় আমাদের সঙ্গে একজন বঙ্গবন্ধু ছিলেন না। সেজন্য এ জাতিকে হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে, প্রার্থনা করতে হয়েছে। অবশেষে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে একটি পতাকা, স্বাধীন দেশ এবং অখণ্ড মানচিত্র উপহার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ৫০ বছর আগেও আমরা ছোটবেলায় দেখেছি এদেশের মানুষ ক্ষুদাকে মনে করতো নিয়তি। চৈত্র মাসেও সারাদেশে নীরব দুর্ভিক্ষ হতো। আমি নিজে সেই নীরব দুর্ভিক্ষ দেখেছি, তখন আমি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি। তখন তিনবেলা মানুষ খাবে তা কেউই প্রত্যাশা করতো না। রোগে চিকিৎসা তা কেউ কল্পনাও করতো না। বড়জোর ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজ ও পানি পড়াতেই ছিল রোগের চিকিৎসা।
এ প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, আজকে আমরা কোথায় এসেছি। শুধুমাত্র একজন মানুষের জন্য। বাংলাদেশের মানুষের ত্রাণকর্তা, মুক্তিদাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতিকে বুঝতে হবে তার (বঙ্গবন্ধুর) এ সেক্রিফাইসটা কত বড় সেক্রিফাইস। তা উপলব্ধি না করলে জাতি হিসেবে সহসাই সামনে যাওয়া আমাদের জন্য দুষ্কর হবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে আজকের বাংলাদেশ দ্রুত বিকাশমান ও আত্মমর্যাদাশীল জাতি উল্লেখ করে পুলিশপ্রধান বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো প্রান্ত নেই যেখানে এখন বাংলাদেশ আলোচিত নয়। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, এমডিজি অর্জন এবং এসডিজি লক্ষ্যে কাজেও এখন বাংলাদেশ। এটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায়। যার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারটি আমাদের কাছে রয়েছে।
পুরস্কার বিতরণীতে দুই ক্যাটাগরিতে শতভাগ সঠিক উত্তরদাতা ৪৩৯ জনের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ২০ জন নির্বাচিত প্রতিযোগীকে ল্যাপটপ ও ট্যাব দেওয়া হয়। শতভাগ প্রশ্নের সঠিক উত্তরদাতা অবশিষ্ট ৪১৯ জনকেও পুরস্কার দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। এছাড়াও মুখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ও সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুরের ধারার চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।