ড. সেলিম রায়হান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) নির্বাহী পরিচালক। বৃহস্পতিবার রাতে যখন এই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, তখন তিনি একটি সেমিনারে অংশ নিতে শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছিলেন। তিনি কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার শোচনীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, এর পেছনের কারণ, সেখান থেকে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য শিক্ষণীয় বিভিন্ন দিক, বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর এর চাপ এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে নেওয়া সরকারের উদ্যোগ ও করণীয় প্রসঙ্গে।
আপনি এখন শ্রীলঙ্কায় আছেন। সেখানকার শোচনীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের বিষয়। কেমন দেখছেন সেখানকার পরিস্থিতি?
সেলিম রায়হান: একটি সম্মেলনে যোগ দিতে আমি কলম্বোয় এসেছি। এখানকার অবস্থা বেশ খারাপ। জ্বালানির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। পাম্পগুলোয় তেলের জন্য দীর্ঘ লাইন। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলো জরুরি সার্জারির কাজ পর্যন্ত করতে পারছে না। এখানকার পত্রপত্রিকায় এসব নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। খাবারের দাম অনেক বেড়ে গেছে এবং সংকটও রয়েছে। শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে ১০ দিনের আমদানি মূল্য পরিশোধের ক্ষমতাও নেই। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে যে ঋণ নিয়েছে, তা পরিশোধেরও সক্ষমতা হারিয়েছে। একে শোচনীয় পরিস্থিতিই বলতে হবে।
হঠাৎ করে কোনো দেশের অবস্থা কি এতটা খারাপ হতে পারে যে জ্বালানির মতো একেবারে জরুরি পণ্য কেনার সক্ষমতাও আর থাকে না? এমন পরিস্থিতি যে হতে পারে, সেটা কি আগে টের পাওয়া যায়নি?
সেলিম রায়হান: দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল। এমন একটি ভিত্তি তৈরি হওয়ার পর এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে আর পতনের সুযোগ নেই। কিন্তু ভুল অর্থনৈতিক নীতি, ক্ষমতায় টিকে থাকার রাজনীতি, গোষ্ঠীতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও দুর্নীতি একটি দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তার প্রমাণ শ্রীলঙ্কা। আজ দেশ চালানোর মতো অর্থ শ্রীলঙ্কার হাতে নেই। আমাদের সঙ্গে কাজ করেন, এমন অনেক অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন সময় সরকারকে সতর্ক করেছেন, নানা পরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু সেগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে আজ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এমন এক বিপর্যয়কর জায়গায় এসেছে। তবে চূড়ান্ত পরিণতি যে এতটা খারাপ হবে, সেটা হয়তো আগে অনুমান করা যায়নি।
অনেকে মনে করেন, শ্রীলঙ্কার কার্যত এ দেউলিয়া পরিস্থিতিতে চলে আসার পেছনে বিদেশি ঋণে অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্পগুলো ভূমিকা রেখেছে। আপনার মন্তব্য কী? নাকি অন্যান্য কারণও রয়েছে?
সেলিম রায়হান: অনেক কিছু মিলেই আজকের সমস্যা তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে তারা একের পর এক ভুল করেছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও ভুল করেছে। শ্রীলঙ্কা দেশটি এখন চলছে একটি পরিবারের শাসনে। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী সব এক পরিবারের। পার্লামেন্টেও এই পরিবারের অনেক সদস্য রয়েছেন। অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিবেচনার চেয়ে গোষ্ঠীতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্র প্রাধান্য পেয়েছে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ার পর নীতিগত পদক্ষেপ না নিয়ে ঋণের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা হয়েছে। কখনো চীনের কাছ থেকে, না পেলে ভারতে কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে। বড় বড় অবকাঠামো তৈরি করেছে। এসব মেগা প্রকল্পের দায় রয়েছে বর্তমান সংকটের পেছনে। বড় বড় অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে যাচাই-বাছাই ছাড়া। সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর ও রাস্তাঘাট বানানো হয়েছে, কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে তা কতটা লাভজনক হবে, সেই বিবেচনা করা হয়নি। ফলে অনেক প্রকল্প শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়েছে। এসব প্রকল্প যেহেতু ঋণ করে করা, তাই সুদসহ এই অর্থ পরিশোধ করতে হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চয়ই জরুরি। কিন্তু তা করতে হয় মূলধারার যে অর্থনীতি অর্থাৎ ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ কমানো, শিল্পায়ন ও রপ্তানি বাড়ানোর বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে মূলধারার অর্থনীতি খুব বিবেচনার মধ্যে ছিল না। রপ্তানি বহুমুখী করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে আমি এ ধরনের প্রকল্পে যারা ঋণ দিয়েছে, সেসব দেশকেও দায়ী করব। চীনের অর্থে তৈরি করা হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দরের ঋণের অর্থ দিতে না পারায় বন্দরটি এখন চীনের কাছে লিজ দিতে হয়েছে।
একে কি চীনের ঋণের ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত করবেন?
সেলিম রায়হান: চীনের ঋণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভূরাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তারা সাধারণত এমন সব প্রকল্পে অর্থসহায়তা দেয়, যার একটি ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। অন্যদিকে ঋণগ্রহীতা দেশগুলোর অদক্ষতা ও মূলধারার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কহীন অর্থনৈতিক নীতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ খাতে ঋণের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় না। চীনের অর্থায়নে শ্রীলঙ্কায় যে বন্দর হয়েছে, তা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি, কিন্তু চীনের লাভ হয়েছে। ঋণগ্রহীতা দেশের অগ্রাধিকার কী, সেটা অনেক সময় যথাযথভাবে যাচাই করা হয় না। জমকালো কিছু করা, বড় প্রকল্প করা—এর মধ্যে অনেকটা লোকদেখানো ব্যাপার রয়েছে। চীনের অর্থায়নে কলম্বোতে একটি টাওয়ার হয়েছে—লোটাস টাওয়ার। বড় এই টাওয়ার দৃশ্যমান, দেখানোর জন্য হয়তো ঠিক আছে কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে এর কোনো অবদান নেই। ঋণ নেওয়ার অর্থ, তা ফেরত দিতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে লাভ হবে না, এমন প্রকল্প যদি ঋণ নিয়ে করা হয়, তাহলে এর ফাঁদে তো পড়তেই হবে।
শ্রীলঙ্কার এই পরিণতি থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার কিছু আছে কি?
সেলিম রায়হান: প্রথমত, আমি মনে করি অর্থনীতিসংক্রান্ত বিষয়গুলো রাজনৈতিক অর্থনীতির জায়গা থেকে দেখতে হবে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় রাখতে হবে। দেশের অর্থনীতি যদি পরিবার বা গোষ্ঠীতন্ত্রের স্বার্থ রক্ষায় পরিচালিত হয়, তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হতে বাধ্য। শ্রীলঙ্কা ২০১৯ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে নেমে গেছে। তার মানে শ্রীলঙ্কা যে উন্নতি করেছিল, তা তারা ধরে রাখতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার দৃষ্টান্ত থেকে আমরা বুঝতে পারছি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেই যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে, এমন নয়। দেশের অর্থনীতি স্বজনতোষী অর্থনীতিতে রূপ নিলে কী বিপদে পড়তে হয়, শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে সে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।
দ্বিতীয়ত, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের নিশ্চয়ই প্রয়োজন আছে, কিন্তু সেটা অর্থনৈতিকভাবে কতটা প্রয়োজনীয়, সেই বিবেচনা জরুরি। আমাদের দেশে অপ্রয়োজনীয় বড় প্রকল্প হয়তো এখনো নেওয়া হয়নি, কিন্তু খরচ যদি বেশি হয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে যদি সময় বেশি লাগে, তাহলে সেগুলো বোঝা হয়ে যেতে পারে। আমাদের এটা মনে রাখা জরুরি যে বড় প্রকল্প ঋণ নিয়ে করা হয় এবং এর জন্য সুদ গুনতে হয়।
তৃতীয়ত, আমাদের অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে বড় দুই খেলোয়াড় হচ্ছে চীন ও ভারত। আমাদের প্রতিবেশী ও কাছের দেশ। দুটি দেশের সঙ্গেই আমাদের জোরালো বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। কোনো দেশকেই উপেক্ষা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি খুব জরুরি। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে আমরা যা দেখেছি, তা হচ্ছে দেশটি কখনো এদিকে, কখনো ওদিকে ঝুঁকে পড়েছে। অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার রাজনীতির কারণে এমনটি হয়েছে। দুটি বড় দেশের পাশে থেকে ভারসাম্য রক্ষা করার পরিপক্বতা সেখানকার রাজনীতিবিদেরা দেখাতে পারেননি। এই দিকটিতে আমাদের সতর্ক অবস্থান নিতে হবে। ভারসাম্য রক্ষা করে পথ চলতে হবে।:
করোনা আমাদের দেশে নতুন দরিদ্র তৈরি করেছে। আপনারা এ নিয়ে কাজও করেছেন। বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কত বলে মনে করেন?
সেলিম রায়হান: এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কত, সেটা বলা কঠিন। পরিসংখ্যান ব্যুরোর উচিত ছিল এখন একটি জরিপ করা। আমরা সানেমের পক্ষ থেকে জরিপ করেছিলাম ২০২০ সালের শেষের দিকে। তখন ৪০ ভাগ জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। বর্তমান হিসাব জানি না। সরকারের দলিলে অবশ্য ২০ ভাগ উল্লেখ করা আছে।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কি?
সেলিম রায়হান: এখানে কয়েকটি দিক রয়েছে। মানুষ নিজে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে বিষয়টি নির্ভর করবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সচলতা ও প্রাণচাঞ্চল্যের ওপর। সেটা থাকলে মানুষের আয় বাড়বে। করোনার সময় অনেক মানুষ টিকে ছিলেন তাঁদের নিজের সঞ্চয় ভেঙে। ফলে আয় বাড়লে বা শুরু হলেও আগের জায়গায় যেতে সময় লাগবে। এ ছাড়া আছে সরকারের তরফে সহযোগিতার বিষয়টি। সরকার দরিদ্র জনগণকে সহযোগিতা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে এটা স্পষ্ট, সরকার অন্তত মেনে নিয়েছে যে মানুষ কষ্টের মধ্যে আছে। বলা যায়, সংকটের একটি স্বীকৃতি পাওয়া গেছে সরকারের কাছ থেকে, যদিও দারিদ্র্যের হার নিয়ে সরকার কিছু বলছে না।
বাংলাদেশের বর্তমান দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি আমাদের নিম্ন আয়ের জনগণের জন্য কোন মাত্রার চাপ সৃষ্টি করছে বলে আপনি মনে করেন? এটা কি সহ্যের বাইরে?
সেলিম রায়হান: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যে চাপটা জনগণের ওপর পড়েছে, তা সহ্যের বাইরের চাপ। কারণ, দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ আগে থেকেই চাপের মধ্যে ছিল। এটা তাদের জন্য বাড়তি বোঝা। জীবনযাত্রার অনেক খরচ মানুষকে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। বিশেষ করে খাবারের ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হচ্ছে। প্রোটিন গ্রহণ কমাতে হচ্ছে, কার্বোহাইড্রেটের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আমরা যখন উন্নতির কথা বলছি, তখন দেশের একটা বড় অংশকে জীবনযাপনের মানের ক্ষেত্রে আপস করতে হচ্ছে। সরকারে হিসাবে মূল্যস্ফীতি ৬ ভাগ ধরা হলেও সানেমের এক গবেষণায় দেখা গেছে, জনগণ বিশেষ করে খাদ্যমূল্যের ক্ষেত্রে এর দ্বিগুণ মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হচ্ছে। সরকার খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করে ২০০৫ সালের সার্ভের ওপর ভিত্তি করে। গত ১৭ বছরে শহর ও গ্রামের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে অনেক পরিবর্তন এসেছে। যে খাদ্যপণ্যের ওপর ভিত্তি করে মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করা হয়, দরিদ্র মানুষ তা কেনেই না। সরকারের মূল্যস্ফীতির হিসাব দিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করা যাবে না।
সরকার এক কোটি পরিবারকে টিসিবির কার্ড দিয়েছে। এই উদ্যোগকে কীভাবে দেখছেন? এর আওতা সম্প্রসারণ বা এ ব্যাপারে আপনার কোনো পরামর্শ রয়েছে কি?
সেলিম রায়হান: এক কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য সুলভে বিক্রির যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমি মনে করি এই উদ্যোগের পরিধি আরও বাড়ানো দরকার। অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার এমনকি অনেক দরিদ্র পরিবার এই টিসিবির কার্ডের তালিকার বাইরে রয়েছে। টিসিবির ট্রাকের পেছনে এই সব মানুষের লাইন কিন্তু ছোট নয়। যাঁরা কার্ড পেয়েছেন, তাঁদের জন্য টিসিবির ট্রাকের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে এফবিসিসিআই বা বিজিএমইএর মতো ব্যবসায়ী সংগঠনের সহযোগিতায় এই সব বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা যেতে পারে। এই সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। অভাব ও সংকটে আছেন, অথচ কোনো কার্ড পাননি, তাঁদের জন্য অবশ্যই টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কেনার সুযোগ উন্মুক্ত রাখতে হবে।
ইউক্রেন সংকট শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। এই অনিশ্চিত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের কিছু করার আছে কি?
সেলিম রায়হান: আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সামনে কী হবে, সেটা বলা কঠিন। পরিস্থিতি অনেকটাই অনিশ্চিত। এমন একটি অবস্থায় আমাদের উচিত বছরজুড়ে বিশ্ববাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। বিশ্বজুড়ে চলমান নানা ঘটনার কারণে কোনো না কোনো পণ্যের ওপর এর চাপ পড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণের একটি স্থায়ী ব্যবস্থা বা সেলতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। অবস্থা খারাপ হলে তোড়জোড় করে খুব ফল পাওয়া যায় না। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কোনো একক দেশের ওপর নির্ভরতাও কমিয়ে ফেলা উচিত।