চলছে পবিত্র রমজান মাস। সারাদিন রোজা রাখার পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ছুটতে হচ্ছে খাওয়ার পানির সন্ধানে। অনেকেই অপেক্ষা করে থাকছেন রাত গভীর হওয়ার। গভীর রাতে নগরীতে হাজার খানেক গভীর নলকূপের মধ্যে হাতে গোনা ১৫-২০টিতে উঠছে পানযোগ্য পানি। কিন্তু এক কলস পানি তুলতে সময় লাগছে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা। এই পানি সংগ্রহ করতেই পড়ছে লম্বা লাইন।
মাঝে মধ্যে বেধে যাচ্ছে তুমুল ঝগড়া। ২০-২৫ জন লাইনে দাঁড়ালেও পানি নিতে পারছেন মাত্র ৭-৮ জন। তাতেই এই ঝগড়া।
নগরীতে পাইপলাইনের মাধ্যমে ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করছে তা ঘরের কাজে কিছুটা চাহিদা মেটাতে পারলেও খাওয়ার পানির চাহিদা মিটছে না। পানির চাহিদা মেটানোর জন্য অনেকেই নিজ উদ্যোগে সাব মার্সিবল বসিয়েছেন। কিন্তু তাও খুব একটা কাজে আসছে না। গ্রামের মানুষের মতো শহরের মানুষদের এখন দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
নগরীর পিটিআই মোড় এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, আমেনা বেগম ও তাসলিমা হোসেন বলেন, ওয়াসার পাইপলাইনের পানি পাওয়া খুবই দূরহ একটা বিষয়। যেটুকু পানি পাইপলাইনে আসে তা অনেক বাড়িমালিক মোটর লাগিয়ে আগেভাগেই টেনে নিয়ে যায়। কেনা পানি দিয়ে আর কতটা চলা যায়।
টুটপাড়া ঘোষের ভিটা এলাকার বাসিন্দা হরষিৎ দে, পাপিয়া সুলতানা, শরিফা খাতুন, বেলাল হোসেন বাবু বলেন, আমাদের এলাকায় ওয়াসার একটা উত্তোলক পাম্প রয়েছে। যা দিয়ে দিনের মধ্যে প্রায় ১৪ ঘণ্টা পানি উত্তোলন করা হয়। কিন্তু তবুও আমরা পাইপলাইনে খুব বেশি পানি পাই না।
তারা বলেন, এই পাম্পের পানি নগরীর মিয়াপাড়া, রূপসা, চানমারী এবং নগরীর টুটপাড়া কবর খানা এলাকা পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়। ফলে আমরা পানি পাই না। এই এলাকায় যতগুলো নলকূপ আছে সবই এখন অকেজো। ফলে খাওয়ার পানির জন্য এক প্রকার যুদ্ধ শুরু হয় গভীর রাতে।
এদিকে সুরক্ষা মঞ্চ খুলনার নেতৃবৃন্দ বলছেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ভূগর্ভের পানির স্তর কোথাও কোথাও ২৫ থেকে ৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে।