মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে, মহাকাশে মার্কিন স্যাটেলাইটে আক্রমণ করার মতো অস্ত্র উদ্ভাবন ও মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে চীন ও রাশিয়া। যাতে করে দেশ দুটি তাদের গোয়েন্দা, নজরদারি ও অনুসন্ধানী মহাকাশযানের বহর বাড়াতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এখবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার হালনাগাদ প্রতিবেদনটি মূলত চীন ও রুশ কর্মকর্তাদের ঘোষণা ও প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। তবু এই হুমকির সারাংশ ২০২৩ অর্থবছরের জন্য পেন্টাগনের প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা বাজেটে বরাদ্দ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন মহাকাশ বাহিনী ও স্পেস কমান্ডের জন্য।
গোয়েন্দা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের রয়েছে একাধিক ভূমিভিত্তিক লেজার অস্ত্র। এগুলো ক্ষমতার ভিন্নতা রয়েছে। এসব লেজার অস্ত্র বিভিন্ন মাত্রায় স্যাটেলাইটকে ব্যাহত, অবনমিত বা ক্ষতি করতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ দশকের শেষ দিকে চীনের হয়ত উচ্চ ক্ষমতার ব্যবস্থা থাকবে যা নন-অপটিক্যাল স্যাটেলাইটের হুমকি বাড়াবে। চীনের নিজের গোয়েন্দা, নজরদারী ও অনুসন্ধানী স্যাটেলাইটের বহরের আকার বাড়ছে। জানুয়ারি পর্যন্ত ২৫০টির বেশি সিস্টেম তাদের রয়েছে। যা যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয়।
একই সময়ে মহাকাশে মার্কিন নির্ভরতাকে ‘দুর্বলতা’ হিসেবে বিবেচনা করছে। তাই তারা পাল্টা মহাকাশ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে যাতে মহাকাশভিত্তিক মার্কিন সেবাকে নিষ্ক্রিয় বা প্রত্যাখ্যান করা যায়। ২০২০ দশকের মাঝামাঝিতে তারা হয়ত আরও বেশি সামর্থ্যের ফিল্ড লেজার তৈরি করবে যা স্যাটেলাইটের ক্ষতি করতে সক্ষম হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে রাশিয়া ভূমিভিত্তিক লেজার রয়েছে। এগুলো স্যাটেলাইট সেন্সরকে অন্ধ করতে পাবে। ২০৩০ সালের মধ্যে রাশিয়া হয়ত উচ্চ ক্ষমতা সিস্টেম পাবে যা শুধু ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল নয়, সব ধরনের স্যাটেলাইটের জন্য হুমকি হতে পারে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, স্যাটেলাইট বিধ্বংসী অস্ত্র ছাড়াও পৃথিবীর কক্ষপথে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বেইজিং সব সময় মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের পক্ষে কথা বলে আসছে এবং অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনে মহাকাশে অনুসন্ধান চালায়।
তিনি আরও বলেন, চীন ও রাশিয়ার তথাকথিত হুমকির কথা বলে মহাকাশে নিজেদের সামরিক সমাবেশকে ন্যায্যতা দিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।