প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতগুলো আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে- তা রাজনৈতিক দল ও প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সিইসি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট করব, নাকি ১০০ আসনে করব, নাকি মোটেই করব না; এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। এতে ছিলেন- প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, চার নির্বাচন কমিশনার এবং শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম কায়কোবাদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মতিন সাদ আবদুল্লাহ, ড. মো. মাহফুজুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) পরিচালক মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ইসির ডাকে সাড়া দিয়ে নির্বাচন ভবনে যান বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিবিদ ও শিক্ষকরা। তারা সেখানে গিয়ে ইভিএম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখেন। এমনকি এর গঠন পদ্ধতি, বিভিন্ন সার্কিট তারা খুলেও দেখেন।
ইভিএম পরীক্ষা করে বের হয়ে শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইভিএমে নিখুঁতভাবে ভোট দেওয়া সম্ভব, কারচুপির সুযোগ নেই।’
বৈঠক নিয়ে ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন মত রয়েছে। এ জন্য আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এই মেশিনের কারিগরি নানা বিষয় আরও ভালোভাবে বুঝতেই কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেছে।
বৈঠকে ইসির তথ্যপ্রযুক্তি দল, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমন্ত্রিতদের মধ্যে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল, বুয়েটের অধ্যাপক এম কায়কোবাদও বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, একজন টেকটিক্যাল ব্যক্তি পারবেন মেশিন নিয়ে মূল্যায়ন করতে। আমরা সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কারিগরি বিশেষজ্ঞদের (টেকনিক্যাল পারসন) ডেকেছি। রাজনৈতিক দলগুলোকেও আমরা অনুরোধ করব- তাদের যে কারিগরি টিম আছে কিংবা যদি থাকে তাদের যাচাই করার জন্য।
সিইসি আরও বলেন, বিষয়টা শতভাগ আপেক্ষিক। আমরা যেটা বলতে চাচ্ছি, আমরা কিন্তু কারো মতামতকে উপেক্ষা করিনি। বিরোধী দল থেকে যে মতামত এসেছে- আমরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিইনি। আমরা অনেকগুলো বৈঠক করেছি। আজও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসেছি। যারা প্রযুক্তিবিদ তাদের সঙ্গে বসেছি। এই মেশিনের (ইভিএম) ব্যাপারে উনাদের বক্তব্যের পরে কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমি শুধু বলতে চাচ্ছি, এই মেশিনের বিষয়ে আরও কয়েকটা মিটিং করব। রাজনৈতিক দলগুলোকেও ডাকা হবে।