উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ১৩ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণের কথা ছিল। প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড্রেন নির্মাণ করলেন পাঁচ কিলোমিটার। ডিপিপি’র হিসাব অনুযায়ী যত কিলোমিটারের ড্রেন নির্মাণ করা হবে ঠিক তত কিলোমিটারের টাকা ব্যয় করতে হবে। কিন্তু ৩৮.৬৩ শতাংশ ড্রেন নির্মাণ করে প্রকল্প পরিচালক টাকা উত্তোলন করলেন ৮৪ শতাংশ কাজের।
ডিপিপি অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। সে হিসাবে ৫.০২ কিলোমিটারের মূল্য হয় পাঁচ কোটি দুই লাখ টাকা। কিন্তু এ কাজের বিপরীতে বিল দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে চুক্তিমূল্যের চেয়ে পাঁচ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখানো হয়েছে
এটি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমোদন নেননি পিডিসহ সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া প্রকল্প পরিচালক ওই প্রকল্পের পাশাপাশি আরও সাতটি প্রকল্পের পিডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিধিবহির্ভূত ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করার মতো এমন নজির স্থাপন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সম্প্রতি ‘পটুয়াখালী জেলাধীন কুয়াকাটা পৌরসভায় নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পৌরসভার জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রকল্প কমপ্লিমেন্টেশন রিপোর্ট (পিসিআর) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। আইএমইডি’র ওই রিপোর্টে পাঁচ কোটি টাকার কাজে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ের চিত্র উঠে এসেছে।
পাইপ লাইন স্থাপনে ডিপিপি’র সংস্থান ছিল তিন কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যার বিপরীতে ব্যয় হয়েছে চার কোটি সাত লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ডিপিপি’র সংস্থানের চেয়ে ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে
আইএমইডি’র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৩৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটি প্রথমে জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০১৯ মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও কাজ শেষ করতে না পারায় ব্যয় বাড়ানো ছাড়া মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়েও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয় বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এরপর আবারও ব্যয় বাড়ানো ব্যতিরেকে মেয়াদ জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত করা হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ ১০০ ভাগ বাড়ানো হলেও মেয়াদ শেষে প্রকল্পের অগ্রগতি ৩৫ শতাংশেরও কম।
আইএমইডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ১৩ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেনের জন্য ডিপিপিতে সংস্থান ছিল ১৩ কোটি এক লাখ টাকা। কিন্তু প্রকল্প এলাকায় দেখা গেছে, ১৩ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেনের মধ্যে মাত্র ৫.০২ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু পাঁচ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণের বিপরীতে বিল দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩৮.৬৩ শতাংশ কাজ করে পিডি বিল তুলেছেন ৮৪ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, ডিপিপি অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। সে হিসাবে ৫.০২ কিলোমিটারের মূল্য হয় পাঁচ কোটি দুই লাখ টাকা। কিন্তু এ কাজের বিপরীতে বিল দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে চুক্তিমূল্য অপেক্ষা প্রায় পাঁচ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বেশি ব্যয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া ডিপিপি সংশোধন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ করা হয়নি বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রকল্পটির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল কুয়াকাটা পৌরসভায় বসবাসকারী জনগণের জন্য খাবার ও গৃহস্থালি কাজের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, কুয়াকাটা পৌরসভায় পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং পৌরসভার দর্শনীয় স্থানসমূহে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করা। প্রকল্পের লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিপিপিতে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও ইনটেক স্ট্রাকচার নির্মাণে সংস্থান রাখা হয়। এ দুটি অঙ্গের মাধ্যমে পৌরসভায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কথা ছিল। কিন্তু আইএমইডি’র বিশ্লেষণে বলা হয়, অঙ্গ দুটি বাস্তবায়ন করা হয়নি। এছাড়া ওয়াটার মিটারসহ গৃহ সংযোগ করার কথা ছিল এক হাজার ৬০০টি। কিন্তু পানি সরবরাহ ব্যতীত সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে ৫৮০টি। ফলে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য অর্জন সম্ভব হয়নি।
আইএমইডিকে প্রকল্প পরিচালক জানান, উচ্চ জলাধারসহ সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্যাকেজটি গত ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি কার্যাদেশ দেওয়া হলেও পৌরসভা থেকে জমি না পাওয়ায় এখনও কাজ শুরু করা হয়নি। তবে ডিপিপি অনুযায়ী, প্রকল্পের সময় শেষ হওয়ার অন্তত ছয় মাস আগে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট অবশ্যই চালু করার কথা ছিল।
প্রকল্পের কাজে যত অনিয়ম
প্রকল্পের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য ছিল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নতকরণ। এ লক্ষ্যে ডিপিপিতে ১০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, কমিউনিটি বিন ২৪টি এবং বর্জ্য সরবরাহের জন্য ৩০টি ট্রলিভ্যান ক্রয়ের সংস্থান রাখা হলেও আটটি পাবলিক টয়লেট ও কমিউনিটি বিন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে বর্জ্য সরবরাহের জন্য ট্রলিভ্যান ক্রয় করা হয়নি। অর্থাৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় উদ্দেশ্যও পুরাপুরি অর্জন হয়নি।
টিউবওয়েল বিতরণের ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী নির্বাচন সঠিক হয়নি মর্মে আইএমইডি’র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রকল্পের আওতায় বিশুদ্ধ পানিপ্রাপ্তির লক্ষ্যে পৌর এলাকায় ২০০টি হ্যান্ড টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রে পাঁচ থেকে ১০টি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েল বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। টিউবওয়েল প্রাপ্তি থেকে অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অর্থাৎ টিউবওয়েল স্থাপনের স্থান নির্বাচন যথাযথ হয়নি।
পাইপ লাইন স্থাপনে ডিপিপি’র সংস্থান ছিল তিন কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যার বিপরীতে ব্যয় হয়েছে চার কোটি সাত লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ডিপিপি’র সংস্থান অপেক্ষা ১৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ১০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ডিপিপি’র সংস্থান ছিল দুই কোটি টাকা। নির্মাণ হয়েছে আটটি টয়লেট। একক দর হিসাবে প্রতিটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও আটটি টয়লেট নির্মাণে প্রতিটিতে ২১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ আটটি টয়লেট নির্মাণে ১৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে।
পরীক্ষামূলক নলকূপ স্থাপনে ডিপিপি’র সংস্থান অপেক্ষা ছয় লাখ ৫৭ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে। এ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ডিপিপি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা করা হয়নি বরং ডিপিপি’র লক্ষ্যমাত্রা বহির্ভূত কাজ সম্পাদনে অর্থব্যয় হয়েছে। যা পরিকল্পনা ও আর্থিক শৃঙ্খলার সুস্পষ্ট ব্যত্যয় এবং সরকারি অর্থের অপচয়।
প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা
প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি, বাস্তবায়নকাল ও ডিপিপি বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, প্রকল্পটির উদ্দেশ্য অর্জনে এর ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা ছিল। ফলে প্রকল্পটির সব অঙ্গের কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে।
এক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও পৌরসভার মধ্যে সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ডিপিপিতে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও ইনটেক স্ট্রাকচার নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারিত থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে পৌরসভা থেকে জায়গা পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও পৌরসভার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আরও সাতটি প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করছেন। এটি উন্নয়ন প্রকল্পের গাইডলাইন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুশাসনের ব্যত্যয়— জানিয়েছে আইএমইডি।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এস এম সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কুয়াকাটা পৌরসভা মেয়রের খাস জমি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি জমি দিতে পারেননি। খাস জমির ওপরই আমাদের ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের কথা ছিল। মেয়র অনেক চেষ্টা করেও দিতে না পারায় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।’
পাঁচ কোটি টাকার ড্রেন নির্মাণ করে ১০ কোটি টাকা কেন তুলেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাঁচ কোটি টাকায় পাঁচ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ হয়েছে। ওই পাঁচ কিলোমিটার ড্রেনের ওপর স্লাব দেওয়া হয়েছে। মেয়রের চাহিদার কারণে স্লাবগুলো দেওয়া হয়েছে।’
মেয়র চাহিদা দিলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া আপনি কি স্লাব দিতে পারেন বা অতিরিক্ত কাজ করাতে পারেন— এমন প্রশ্নের জবাবে পিডি বলেন, ‘না সেটা পারি না। তবে, চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজটি হয়েছে। চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে মিটিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এরপর আমি কাজটি করি। পৌরসভার চাহিদা ও চিফ ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরই কাজটি করা।’
১০টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের কথা থাকলেও আটটি নির্মাণ করে এ খাত থেকেও অতিরিক্ত অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে— এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে বাস্তবিক কাজ বেশি হয়েছে। যেকোনো কাজই বাস্তবিকভাবে কম-বেশি হতে পারে। আমাদের অনিয়ম করার ইচ্ছা নাই। বাস্তবিক অর্থে যা হয়েছে সেটার টাকাই খরচ হয়েছে। যেমন- ডিপিপিতে না থাকলেও স্লাবের কাজ করতে হয়েছে। না করলে দুর্নাম হতো। আজ তো স্লাব ছাড়া চলে না। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি যখন হয়েছে তখন সঠিকভাবে হয়নি। এছাড়া কুয়াকাটা পৌরসভা অত উন্নত হয়নি যে সেখানে ১৩ কিলোমিটার ড্রেন করতে হবে। তারা ফিজিবিলিটি স্টাডি ঠিক মতো করেনি। তারা ভুল করলেও আমি তা করতে পারি না।’
এক হাজার ৬০০ বাসায় পানির সংযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫৮০টি— এ বিষয়ে পিডি বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে পাইপ কানেকশন দিলেই তো হবে না। হাউজ কানেকশনও লাগবে। কেউ যদি হাউজ কানেকশন দিতে না চান, তাহলে তো জোর করে দেওয়া যায় না। এসব কাজের বিষয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ার অবগত। তাকে জানানো ছাড়া কোনো কিছুই হয়নি।’
আইএমইডি’র প্রতিবেদনে প্রকল্পের ৩৫ শতাংশ সম্পন্ন হওয়ার চিত্র উঠে এসেছে। এই ৩৫ শতাংশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে প্রকল্প কীভাবে সমাপ্ত হলো— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে আইএমইডি ভুল করেছে। প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৫৪ থেকে ৫৫ শতাংশ। ডিসি সাহেব জমি না দেওয়ায় পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘আপনি অফিসে আসেন। বিষয়গুলো দেখে তারপর বলব। এত কিছু তো আমার পক্ষে মনে রাখা সম্ভব না। না দেখে কি করে বলব?’
‘আমি যা করেছি, চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অনুমতি নিয়েই করেছি’— পিডির এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বলেন, ‘আপনি যেটাই বলেন, আমাকে তো পেপার দেখে বলতে হবে। আমার পক্ষে তো সারা বাংলাদেশের সবকিছু মনে রাখা সম্ভব না। আমি ভাই কম্পিউটার না। আপনি রোববার আসেন, আমি দেখে সব বলতে পারব।’
প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন অনিয়মের বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক প্রকল্পেই এমন অবস্থা দাঁড়ায়। প্রকল্পের কাজ সময় মতো শেষ হয় না। ফলে সময় ও ব্যয় দুটোই বাড়ে। এছাড়া কাজ না করে অনেক সময় টাকা তুলে নেওয়া হয়। কাজেই এখানে দুর্নীতি হয়েছে, আছে দায়বদ্ধতার অভাবও। এসব প্রকল্পে অ্যাকাউন্টিবিলিটি থাকে না। আইএমইডি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের প্রতিবেদনটা সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও একনেকে যাওয়া উচিত। তাদের-ই দায়িত্ব দেওয়া উচিত যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার।’
‘উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান থাকলেও সেই অনুযায়ী কোনো কাজ হয় না। কাজ হলে তো সময় ও ব্যয় বাড়ত না। এজন্যই বলছি, যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এটি করলে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করতে কেউ সাহস পাবে না।’
‘সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’— উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আইএমইডি’র প্রতিবেদনে যদি অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য আসে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার কাছে প্রতিবেদনটা এখনও আসেনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।