চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে সংগঠনের একাংশের ডাকা অবরোধ দ্বিতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াতের বাস ছেড়ে যায়নি। বন্ধ রয়েছে শাটল ট্রেনের চলাচল।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় সরেজমিনে দেখা যায়, অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। তবে চবির মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়েছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারছে।
চবি শাখা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত বিজয় উপপক্ষের নেতা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, কমিটি পুনর্গঠন করে তাঁদের মূল্যায়ন করতে হবে। তা না হলে তাঁরা অবরোধ চালিয়ে যাবেন। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে আপাতত মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের অবরোধের কারণে গতকাল সোমবারের মতো আজও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী বাস ক্যাম্পাস থেকে বের হতে পারেনি।
নগরের বটতলী থেকে ক্যাম্পাসে দিনে সাতবার আসা-যাওয়া করে শাটল ট্রেন। এই ট্রেনে দৈনিক ১০ হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শাটল ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার রতন কুমার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আজও শাটল চলছে না।’
অবরোধের কারণে দ্বিতীয় দিনের মতো আজও ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন চবির ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমির মোহাম্মদ মুছা। তিনি প
বলেন, শাটল ট্রেন চলাচল না করলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবেন না। তাই আজও ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত হতে পারে। তবে পরীক্ষার বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এই সিদ্ধান্ত বিভাগের সভাপতি নেবেন।
গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনটির কেন্দ্রীয় দপ্তর চবি শাখার ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এই কমিটির অনুমোদন দেন।
কমিটি ঘোষণার পরই পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের প্রায় ৩০টি কক্ষ ভাঙচুর করেন। রোববার রাতেই চবির মূল ফটক আটকে দিয়ে অবরোধের ডাক দেন নেতা-কর্মীরা।
গতকাল সকালে ক্যাম্পাসগামী শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করা হয়। এদিন চলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী বাস। তাই ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি।
চবি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষে আছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীরা। আরেকটি পক্ষে আছেন সাবেক সিটি মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা।
ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে রয়েছে ১১টি উপপক্ষ। এর মধ্যে বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) মহিবুলের, বাকি নয়টি উপপক্ষ নাছিরের অনুসারীদের।