কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ছাত্রলীগের দুপক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কয়েকজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জুমার নামাজের আগে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল রায়হান বঙ্গবন্ধু হল হয়ে মসজিদে যাচ্ছিলেন। এ সময় ওই হলের ছাত্রলীগের কর্মী সেলিম রেজা ও রিফাতসহ কয়েকজন তার সামনে দিয়ে ধীরগতিতে হাঁটছিলেন। তাদের সাইড দিতে বলেন আশরাফুল রায়হান।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে নামাজ শেষে আশরাফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রেজা ও রিফাতরা। এ থেকেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন উভয় হলের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনার রেশ ধরে ওই দিন সন্ধ্যায় নজরুল হলের ছাত্রলীগ কর্মী আবরারকে মারধর করেন বঙ্গবন্ধু হলের আকরাম ও সালাউদ্দিন সোহাগ নামে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান উভয় হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
উভয়পক্ষই একে-অপরকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় বিভিন্ন নেতাকর্মীর হাতে লাঠি, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষ পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রণে আনেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
শনিবার দুপুরে খাবারের জন্য কয়েকজন বিচ্ছিন্নভাবে হল থেকে বের হতে থাকেন। দুপুর ২টার দিকে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও নজরুল হল ছাত্রলীগ কর্মী তানভীর আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে খেতে গেলে তাকে মারধর করেন বঙ্গবন্ধু হলের কয়েকজন কর্মী।
এ ঘটনার জের ধরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠে ক্যাম্পাস। এরপর উভয় হলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন প্রধান ফটকে। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যেই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবিএস ফরহাদ আহত হন।
আহতদের বেশ কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মো. সায়েম, একই হলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার সাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক পাপন মিয়াজী, ছাত্রলীগ কর্মী কাউসার, সেলিম, মিরহাম রেজা, রাশেদ, বিজয় ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ, একই হলের কর্মী বায়েজিদ আহমেদ বাপ্পী, ফয়সাল, কামরুল, সাগর দেবনাথ, এমরান, আশিক, জামন, জয়রাজ, তানভীর, নাহিয়ান ও নাজিম। এদের মধ্যে বায়েজিদ আহমেদ বাপ্পীর মাথায় ১৬টি সেলাই লেগেছে বলে জানিয়েছেন সহপাঠীরা।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ বসে বিষয়টি মীমাংসা করবে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।