পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে জনগণের উত্তাল তরঙ্গে সরকার ভেসে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের মতো তাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) আর সুযোগ দেওয়া হবে না। পরিষ্কার করে বলছি, এখনি পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তা না হলে জনগণের উত্তাল তরঙ্গে সরকারকে ভেসে যেতে হবে।’
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে কৃষক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সার, বীজ, ডিজেল, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম কমানো এবং কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষক দল এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি দুর্ভিক্ষের কথা বলেছেন। দুর্ভিক্ষ তো আসবে গত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে। এখনো সময় আছে নিরাপদে প্রস্থান করুন, তা না হলে রেহাই নেই।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কৃষকদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না। ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে ৫০ গুণ, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০ গুণ। তাহলে এখন কৃষকরা কোথায় যাবেন? তাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।’
সমাবেশ থেকে ফিরে গিয়ে কৃষকদের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জাননা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কৃষক দলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকার কৃষকের জন্য কোনো কাজই করছে না। কৃষিকাজের সব উপকরণের দাম বাড়িয়েছে। অন্যদিকে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার নেত্রীকে বন্দি করে রেখেছেন। যদি কথায় কাজ না হয়, তাহলে হাতুড়ি নিয়ে আসবো, জেলের তালা ভাঙবো, নেত্রীকে বের করবো। একটু অপেক্ষা করছি, ডাক আসলে সারা বাংলাদেশের মানুষ যে নেত্রীকে ভালোবাসে সেই নেত্রীর জন্য ঢাকায় অবস্থান নেবে, নেত্রীকে মুক্ত করবে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিন। তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে কৃষি উপকরণের দাম না কমালে সচিবালয় ও গণভবন ঘেরাও করা হবে।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, সদস্যসচিব আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লিটন প্রমুখ।