বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা কাজের সীমারেখা অতিক্রম করলে সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপির নেতা এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরির পৃথক বৈঠক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমার বিস্তারিত (জাপানের রাষ্ট্রদূতের দুই বৈঠক সম্পর্কে) জানা নেই। ছয় মাস আগে অবশ্যই একটা পর্ব গেছে। যদি কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত আবার সে ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হন, যেটা আমরা মনে করি যে তাদের কাজের সীমারেখা অতিক্রম করছে, তাহলে আমরা অবশ্যই তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে এখন পর্যন্ত এ রকম কিছু আমাদের চোখে পড়েনি।
দিল্লিতে পার্লামেন্টে ভবনের দেওয়ালে ‘ ভারতের অখন্ড মানচিত্র’ স্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার কোনো কারণ নেই। তারপরও বাড়তি ব্যাখ্যার জন্য আমরা দিল্লির মিশনকে বলেছি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতে। তাদের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা কী, তা জানার জন্য।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যেটা জেনেছি, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন যে, এটি অশোকা সাম্রাজ্যের মানচিত্র, এটি খ্রিস্টের জন্মের তিনশ বছর আগের। সেই সময়ের যে অঞ্চলটি ছিল, তার একটি মানচিত্র এবং এটি একটি ম্যুরাল। ওই ম্যুরালে চিত্রায়ণ করা হয়েছে মানুষের যাত্রা। এখানে সাংস্কৃতিক মিল থাকতে পারে, কিন্তু এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে ছয় কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছে তাদের সঙ্গে সরকার কথা বলবে বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা ওই কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে কথা বলবো। শুধু তাই না, এ অঞ্চল নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে বা এ ধরনের বিষয়ে যাদের আগ্রহ আছে- তাদের সকলকেই নিয়মিতভাবে আমাদের অবস্থান জানাবো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চিঠিটি সংগ্রহ করেছি। অন্য যেকোনও চিঠির মতো এখানে কিছু বাড়তি বলা হয়েছে। এমনকি তথ্যের বড় ধরনের ঘাটতি আছে, অসামঞ্জস্য আছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা, সংসদ সদস্যরা বিশেষ করে অন্য দলের সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে অনেক কিছু বলেন। কেউ হয়তো লেখেনও, কিন্তু আমরা সেটি জানি না। হয়তো আমার বিরুদ্ধে বলেন বা লেখেন। এটি রাষ্ট্র বা সরকারের প্রধানের ওপর নির্ভর করে তিনি ওই চিঠি বা কথাগুলো বিবেচনায় নেবেন কি নেবেন না।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এরকম চিঠি অতীতেও এসেছে, ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে আসতে পারে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এই ধরনের কার্যক্রম তত বাড়তে থাকবে। বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম বা শক্তি কাজ করছে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা তাদের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন বাংলাদেশের মানুষ আমাদের শক্তি। তিনি বলেন, বিদেশে কারো কাছে ধর্না দিয়ে বা কারো চাপে পড়ে বা কারো সঙ্গে সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতেই হবে, এরকম কোনও নীতির প্রতি অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশের মানুষকে পেছনে ফেলে দেওয়ার নীতিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না।