রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক বাবুল চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ঘুষ ছাড়া ফাইল না ধরার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, মিস কেস, নামজারিসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হন। ভূমি সংক্রান্ত কোনও কাজ করাতে গেলে তাকে ম্যানেজ না করলে মেলে না কোনও ফল। তাকে সবাই ‘বাবু সাহেব’ নামে চেনেন। তার সরাসরি ঘুষ নেওয়ার একটি ২৮ সেকেন্ডের ফুটেজ বাংলা ট্রিবিউনের হাতে এসেছে।
এতে দেখা যায়, নামজারির একটি কাজে তার হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন একজন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন ওই ভূমি অফিসের এক দালাল। ভিডিওর শুরুতে বাবুল চন্দ্র দালালকে বিরক্তির সুরে বলেন, ‘তুমি এই সকাল বেলা কী পচা কামডা (কাজ) নিয়ে আইছো?’ পাশে থাকা লোকটি তখন বললেন, ‘না বাবু পচা না, এগুলো করে দিতে হবে। কোনও উপায় নাই।’ পরে এই কর্মকর্তা আরও কিছু টাকা দাবি করলে (শব্দ অস্পষ্ট) দালাল তাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ‘ঘুষ হিসাবে নগদ টাকা ছাড়া কোনও কাজই হয় না তার দফতরে। একটি কাজের জন্য তিনি দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন। পরে একটি মাধ্যমে আমি জানতে পারি, বাবু সাহেবকে ম্যানেজ করলে কাজ হয়। বাবু সাহেবকে ম্যানেজ করার পর কাজটি হয়ে যাবে বলে জানান একজন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাবু সাহেব টাকা ছাড়া কোনও কাজই করতে চান না। টাকা না দিলে ফাইল ফেলে রাখেন দিনের পর দিন। অনেক সময় নানা অজুহাত দেখিয়ে বড় স্যারের টেবিল পর্যন্ত ফাইল পৌঁছাতেই দেন না।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক বাবুল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ভিডিওটি আমার দফতরের। এগুলো রাখেন! কোনও নিউজ করার দরকার নাই। আপনাদের খুশি করবো! সমস্যা নাই।’
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমার কথা বলতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতির প্রয়োজন। তবে আমার কাছে কেউ কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে কঠিন ও কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভিডিওটি দেখে বিধি মোতাবেক ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম। তিনি বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’