ইউক্রেনের সীমান্তে রুশ সেনাদের জড়ো হওয়ার খবর পাওয়ার পরই পূর্ব ইউরোপে সম্ভাব্য মোতায়েনের জন্য প্রায় সাড়ে আট হাজার মার্কিন সেনাকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে মোতায়েনের প্রস্তুতির এ নির্দেশ জারি করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। ইউক্রেনে সম্ভাব্য রাশিয়ান আক্রমণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন সরকার। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবির বরাত দিয়ে এ খবর নিশ্চিত করেছে সিএনএন।
কিরবি জানিয়েছেন, ‘মার্কিন সেনাদের উচ্চতর সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছিল ন্যাটোর রেসপন্স ফোর্সকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে। তবে অন্য যেকোনও জরুরি পরিস্থিতির জন্যও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ রয়েছে তাদের।’
কিরবি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দেশে এবং বিদেশে তার বাহিনীর প্রস্তুতি বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই ন্যাটোর রেসপন্স ফোর্স কাজ শুরু করা মাত্রই যেন তারা সমর্থন দিতে পারে সেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’
কিরবি জানান, এখন ন্যাটো রেসপন্স ফোর্সে প্রায় ৪০ হাজার সেনা আছে।
এর আগে সোমবার সিএনএন জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন পূর্ব ইউরোপে পাঠাতে চায় এমন নির্দিষ্ট সামরিক ইউনিট বাছাই করার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
ন্যাটোর রেসপন্স ফোর্স মোতায়েনের সময় বা অন্য কোনোভাবে নিরাপত্তার পরিবেশ বিঘ্নিত হলে, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত অতিরিক্ত ব্রিগেড, সেনা, লজিস্টিক, চিকিৎসা, যুদ্ধজাহাজ, গোয়েন্দা নজরদারি, অনুসন্ধান, পরিবহন এবং সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে।’ জানালেন কিরবি।
তবে মার্কিন সেনাদের মোতায়েন করা হবেই এমনটা নিশ্চিত করে বলেননি কিরবি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের শুধু এটা নিশ্চিত করতে চায় যে, যেকোনও প্রয়োজনে সেনা মোতায়েনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তুতি আছে।
এদিকে, ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের দেশটি ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোমবারের মধ্যে ইউক্রেন ছাড়ার এই প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন সীমান্তের চার হাজার মাইলেরও বেশি এলাকাজুড়ে সেনা পাঠিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কার মধ্যেই মস্কোর তরফে একটি নৌ-মহড়ার ঘোষণাও এসেছে।
যুদ্ধ ট্যাংক, সেনা ও অন্যান্য সামরিক যান বহন করতে সক্ষম ছয়টি রাশিয়ান ল্যান্ডিংশিপ গত সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরের পথে যাত্রা করে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দিলে দেশটির দক্ষিণ উপকূলের এমন শক্তিশালী অবস্থানকে কাজে লাগাতে পারে মস্কো।