বৃহস্পতিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

আকাশপথে উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে ত্রুটি, গোপন রাখায় তোলপাড়

প্রতিবেদক
ukadmin
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২ ৩:০০ অপরাহ্ণ

ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ ‘আকাশতরী’র বিজি-৬০১ ফ্লাইটের ইঞ্জিনে গুরুতর ত্রুটি দেখা দেওয়ার পরও তা গোপন রাখায় তোলপাড় শুরু হয়েছে বিমানবন্দরে। 

বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানান, বিমানের বহরে নতুন আসা ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ ‘আকাশতরীতে’ এ দুর্ঘটনা ঘটে। পাইলট সেই ত্রুটি গোপন রেখে সিলেট থেকে ফ্লাইট নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসার পরও নিয়মানুযায়ী তা লগ বুকে এন্ট্রি করেননি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা বলছেন, উড়োজাহাজের দুটি ইঞ্জিনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্টস জ্বলে গেছে। বিমান কর্মকর্তারা বলছেন, এতে আর্থিক ক্ষতি দাঁড়াতে পারে অর্ধ কোটি টাকারও বেশি। 

বিমানের প্রকৌশল ও ফ্লাইট অপারেশন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১৩ সেকেন্ডের অবহেলায় ‘আকাশতরী’র বিজি-৬০১ ফ্লাইটের ‍দুটি ইঞ্জিনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্টস জ্বলে গেছে। এমনকি দুটি ইঞ্জিনই জ্বলে যেতে পারে-এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। 

বিমান কর্মকর্তারা বলছেন, উড়োজাহাজটি আকাশে ওঠার পর পাইলট কোনো কারণ ছাড়া পাওয়ার লিভারটিতে ১০০ ভাগের বেশি ইমারজেন্সি পাওয়ার (ওয়াল টু ওয়াল) ব্যবহার করেছেন। পরবর্তী সময়ে তড়িঘড়ি করে পাওয়ার লিভারটি আবার শতভাগের জায়গায় ডিটেন্টে নিয়ে এলেও দেখা গেছে ১৩ সেকেন্ড ব্যবহৃত হয়েছে। 

তারা আরও জানান, ১ ফেব্রয়ারি বিমানের এ ফ্লাইটটি (বিজি-৬০১) সিলেট থেকে ঢাকায় আসে। এ ঘটনায় বিমানের ওই উড়োহাজটি গ্রাউন্ডেড করা হয়। মেরামতের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিমানের হ্যাঙ্গারে রাখা হয়। 

সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের ঘটনায় সাধারণত বিমানের দুটি ইঞ্জিনই জ্বলে যাওয়া কিংবা ইঞ্জিনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জ্বলে যাওয়ার কথা। যার কারণে ইঞ্জিন মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানে গেলে ৬০ কোটি টাকার বেশি অর্থ গুণতে হতে পারে বিমানকে। 

এদিকে বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী কোম্পানি ডি হ্যাভিলেন্ড কানাডা (ডিএইচসি) ও ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী কোম্পানি পেটেন্ট হুইটনিকে ইমেইলে জানানো হয়েছে।

ফিরতি মেইলে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে অবিলম্বে দুটি ইঞ্জিন তাদের নির্ধারিত শপে পাঠিয়ে চেক করার জন্য বলা হয়েছে। এর আগ পর্যন্ত উড়োজাহাজটি দিয়ে কোনো ধরনের ফ্লাইট না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুটি কোম্পানিই বিমানকে ইমেইলে জানিয়েছে, এ ধরনের দুর্ঘটনার পর এয়ারক্রাফটের দুটি ইঞ্জিনই জ্বলে যেতে পারে।

ড্যাস-৮ কিউ ৪০০ মডেলের এ উড়োজাহাজটি সম্পূর্ণ নতুন। গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি এটি ঢাকায় আনা হয় কানাডার ডি হ্যাভিলেন্ড অ্যারোস্পেস থকে। কানাডা ও বাংলাদেশ সরকারের জিটুজি চুক্তিতে উড়োজাহাজটি ক্রয় করা হয়। ৭৪ আসনবিশিষ্ট উড়োজাহাজটির নাম দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বিমানের প্রশাসন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ক্যাপ্টেন রুবাইয়েত লগ বইয়ে এন্ট্রি না করলেও এয়ারক্রাফটের ফ্লাইট ডেটা মনিটর (এফডিএম) থেকে তারা সবকিছু জেনে গেছেন। এরপরই বিষয়টি প্রথমে বিমানের শীর্ষ পর্যায়ে জানানো হয়। তারপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ডিএইচসি এবং পিডব্লিউসিকে জানানো হয়।

বিমানের ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার এত বড় ঘটনা গোপন রাখার চেষ্টা করা হয় বলে বিমান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিমান কর্মকর্তারা। 

তারা জানান, বিমানের পরিচালক ফ্লাইট অপারেশনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

বিমানের এক কর্মকর্তা জানান, উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করা হলেও এত বড় ঘটনার পরও পাইলট বহাল তবিয়তে আছেন। বিমানের ওই ফ্লাইটে পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন রুবাইয়েত ও কো-পাইলট ক্যাপ্টেন জামান। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করে তাদের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই পাইলটদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিমান। জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে তাদের দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।গত মঙ্গলবারও ক্যাপ্টেন রুবাইয়েত ঢাকা-কলকাতা এবং ঢাকা-যশোর ফ্লাইট করেছেন। 

সর্বশেষ - বাংলাদেশ