সার্চ কমিটির কার্য্ক্রমকে ‘তামাশা’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের কাছে নির্বাচন কমিশনের নাম পাঠানো ‘অর্থহীন’। তিনি বলেন, ‘পুরোপুরিভাবে এটাতে (সার্চ কমিটি) তামাশা ছাড়া আর কিছু নেই। কারণ, এর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে বিভ্রান্ত করা, বিভিন্নভাবে নিয়ে যাওয়া, একটা আইওয়াশ দেওয়া।’
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে এই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি তারই প্রেক্ষাপটে মনে করে, এখন অনুসন্ধান কমিটিতে নাম প্রেরণ এবং নির্বাচন কমিশন গঠন একেবারেই অর্থহীন। বিএনপি বিশ্বাস করে, ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার নীলনকশার অংশ হিসেবে পুনরায় নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারি তৎপরতা সেই চক্রান্তের অংশ।’
সার্চ কমিটির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এত এত পদ্ধতিতে এভাবে সার্চ কমিটি তৈরি করে, সুশীল সমাজের মতামত নিয়ে ৩২২টা নাম নিয়ে, এর মধ্য থেকে প্রস্তাব করছি। আমরা তো কিছু করিনি। যা করেছেন তো আপনারাই দিয়েছেন সব নাম। এভাবে একই পদ্ধতিতে গত দুই-দুটি নির্বাচনের মতো নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে এবং একই পদ্ধতিতে তারা নির্বাচনটাকে নিয়ন্ত্রণ করবে।’
স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন বর্তমান অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনও অবস্থাতেই নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচনে এই সত্য প্রমাণিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তাই মনে করি এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সবার গ্রহণযোগ্য, একটি অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক পার্লামেন্ট ও সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভূতের মুখে রাম নাম বলে একটা কথা আছে তো। আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের কথা হচ্ছে সেটাই। যারা গণতন্ত্রের কথা বিশ্বাসই করে না, তারা গণতন্ত্র কোনোদিন প্র্যাকটিস করে না, প্র্যাকটিস করার সুযোগ দেয় না। যখন ক্ষমতায় এসেছে সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা যখন এসব (গণতন্ত্র) কথা বলে, তখন জনগণ কি বিশ্বাস করে না করে, তা আমার চেয়ে আপনারেই বেশ ভালো জানেন।’