সোমবার , ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

৭০ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি নারায়ণগঞ্জের ভাষাসৈনিকদের

প্রতিবেদক
ukadmin
ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২ ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ

রাজধানী ঢাকা সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় ভাষা আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের ভূমিকা ছিল অগ্রগামী। ভাষা-সংগ্রামের প্রথম দিকেই নারায়ণগঞ্জে মফিজউদ্দিন আহম্মদকে আহ্বায়ক ও আজগর হোসেন ভূঁইয়াকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেই দিনগুলোতে আন্দোলনে উত্তাল ছিল নারায়ণগঞ্জ। এক সময় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলা। ভাষা আন্দোলনে শহীদদের বিভিন্নভাবে স্মরণ রাখে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন বহু ভাষাসৈনিক। তবে ৭০ বছর পেরুলেও সব ধরনের তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন নারায়ণগঞ্জের ভাষাসৈনিকরা।

এ সম্পর্কে ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক তার একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের উত্তাপ ভালোভাবেই লেগেছিল নারায়ণগঞ্জ শহরে। যুবলীগ নেতা সফি হোসেন খান, একেএম শামসুজ্জোহা প্রমুখের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে ছাত্র-জনতা ও শ্রমজীবী মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে ভাষা-আন্দোলনের যে অধ্যায় রচিত হয়, তা ছিল নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষের জন্য গর্ব ও অহংকারের। ভাষা-আন্দোলনের আগুন শুধু নারায়ণগঞ্জ শহরে সীমাবদ্ধ ছিল না, শহরতলিসহ আশপাশের এলাকা পর্যন্ত ছিল এর বিস্তার।

কিন্তু ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছরেও নারায়ণগঞ্জের ভাষাসৈনিকদের রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি মেলেনি। এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ভাষাসৈনিকদের নামে কোনো স্থাপনা নেই। ভাষা আন্দোলনে যারা অবদান রেখেছিলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের তালিকাও প্রণয়ন করা হয়নি।

২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সুধীজন পাঠাগার ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শতাধিক ব্যক্তির নাম সংগ্রহ করে একটি তালিকা তৈরি করে। এতে ১১০ জনের নাম রয়েছে। তারা হলেন-
খান সাহেব ওসমান আলী, মফিজউদ্দিন আহাম্মদ, আজগর হোসেন ভূঁইয়া, শফি হোসেন খান, একে এম শামসুজ্জোহা, এম এন এ আব্দুল আউয়াল, আফজাল হোসেন, মমতাজ বেগম, সৈয়দ আকমল আফেন্দি (দুলু আফেন্দি), গফুর চৌধুরী, ওয়াহিদ মিয়া, খাজা জহিরুল হক, বশির উদ্দিন আহমেদ, মোয়াজ্জেম হাসান জামিল, মুস্তাফা সারওয়ার, গোলাম মোর্শেদ ফারুকী, শাহাবউদ্দিন, মোসলেহউদ্দিন, নূরউদ্দিন আহমেদ, নাসিরুল্লাহ, মোতালিব, কবি হাফিজউদ্দিন, আব্বাছ আলী, জানে আলম, দাইমউদ্দিন আহাম্মেদ, সুলতান মাহমুদ মল্লিক, লুৎফর রহমান, মশিউর রহমান, বজলুর রহমান, আলমাছ আলী, আব্দুল লতিফ, রইসউদ্দিন, মজিবর রহমান, নাজির মোক্তার, হাবিবুর রশিদ, নুরুল ইসলাম মল্লিক, ফয়েজ আহাম্মদ, সম্বল মিয়া, বাদশা মিয়া, আক্কাস আলি, পিয়ার মাহমুদ, আব্দুল মান্নান, ক্বারি আমিরুল্লাহ, সরাফত আলী, বেগম মনিমালা, বেগম আয়েশা আক্তার জালাল, খোন্দকার নোয়াব আলী, রুহুল আমিন, জয়নাল আবেদীন খান, বিচারপতি বদরুজ্জামান, এমদাদ হোসেন শিল্পী, আবু নাসের ওয়াহিদ ও গোলাম আলী।

এছাড়া রয়েছেন- আবুল খায়ের, আনোয়ার, মোখলেসুর রহমান, ওয়ালিউদ্দিন, ইমাম হোসেন ঘাইনা, ডা. আব্দুর রহমান, টি হোসেন, সফিউদ্দিন মৃধা, সাংবাদিক হানিফ খান, জয়নাল আবেদীন খান, কালু (এমপি আউয়ালের ভাই), সিরাজ ভুঞা, হাজি মুজাফফর আলী, সাদে আক্কাছ, চন্নু গুহ, আমিনুল নোয়াব, আমানুল্লাহ খান, লোকমান হেকিম, মতিউর রহমান, শেখ মিজানুর রহমান, আব্দুস সালাম, আওলাদ হোসেন, নুরউদ্দিন, ফিরোজা বেগম, আয়েশা বেগম (রেনু), ইলা বকশী, বেগম মেহেরুন্নেছা (মেহের), রিজিয়া বেগম (রাওয়ালপিন্ডি), নাছির উদ্দিন আহমেদ, আমীর আলী মিয়া, শামসুর রহমান কুর্মি, হাবিবুর রহমান (টুক্কু), সফর আলী, কাজী আবুল কাশেম, সফিউদ্দিন আহাম্মেদ, আব্দুল হালিম, কালু ভুঞা, আলা বক্স, হাদিস মোল্লা, নূর মোহাম্মদ, বিলাস (পাগলা), মোনায়েম হোসেন, জানে আলম (ছোট), রমিজউদ্দিন, হাজি আফতাবউদ্দিন, ডা. মজিবুর রহমান, নিখিল সাহা, আবু বকর চৌধুরী, আব্দুল মান্নান, তাজামুল্লাহ খান, আইজউদ্দিন আহাম্মদ। এছাড়া ভাষাসৈনিক হিসেবে নাগিনা জোহা, খাজা মহিউদ্দিন, হাফিজুন্নেসার নাম রয়েছে।

এসব ভাষা শহীদের স্মৃতি রক্ষায় কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি। তারা বরাবরই অবহেলিত। তাদের কতজন জীবিত আছেন তার সঠিক তথ্যও নেই। বেঁচে থাকলেও তাদের কোনো খোঁজখবর রাখে না কেউ। সবার কাছে অপরিচিতই রয়ে গেছেন তারা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী বলেন, ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর হয়ে গেছে। ভাষাসৈনিক যারা ছিলেন তাদের অধিকাংশই বেঁচে নেই। দু-একজন যারা বেঁচে আছেন তারা বরাবরই অবহেলিত। বিভিন্ন সময় যে তালিকার কথা বলা হয় সেখানে যারা ভাষাসৈনিক না তারাও তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এজন্য এগুলো নিয়ে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তো আছেই। স্বাধীনতার আগেও তারা অবহেলিত ছিলেন। স্বাধীনতার পরেও ভাষা সৈনিকরা সে অর্থে মূল্যায়ন পাননি। তাদের তালিকাও তৈরি করা হয়নি।

‘২০১০ সালে আহমেদ রফিককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছিল সরকার। তিন ক্যাটাগরিতে কাজ শুরু করলে সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে এমনভাবে নাম ও তদবির আসা শুরু হয় যে তারা তালিকা নিয়ে কাজ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। ফলে সারাদেশে কোথাও তালিকা তৈরি করা হয়নি। একই সঙ্গে তাদের কোনো স্বীকৃতিও মেলেনি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, ভাষাসৈনিকদের নিয়ে কোনো স্থাপনা আছে কি না আমার জানা নেই। আমি খুঁজে পাইনি। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি, কিন্তু কোনো তালিকা পাচ্ছি না। কোনো নির্ভরযোগ্য সোর্সও পাচ্ছি না। কোনো ডকুমেন্ট পাচ্ছি না, জীবিত কাউকে পাচ্ছি না। নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই কাজ করবো। চেষ্টা করছি, দেখি পাই কি না।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য

আপনার জন্য নির্বাচিত