রবিবার , ৬ মার্চ ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

অনিশ্চয়তায় ১৩২ উন্নয়ন প্রকল্প

প্রতিবেদক
ukadmin
মার্চ ৬, ২০২২ ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

অনিশ্চয়তায় পড়েছে বৈদেশিক সহায়তার (ঋণ ও অনুদান) জন্য বাছাই করা ১৩২ উন্নয়ন প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজন ৫৮ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো সংস্থান হয়নি। চলতি অর্থবছর (২০২১-২২) শেষ হচ্ছে জুনে। বাকি আর মাত্র ৪ মাস। এ সময়ের মধ্যে টাকা জোগাড়ের সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ১৩২ প্রকল্পের মধ্যে সরকারের উচ্চ অগ্রাধিকারে রয়েছে ৯৬টি। মধ্য অগ্রাধিকারে ২৬ এবং নিু অগ্রাধিকারে রয়েছে ১০টি। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) বৈদেশিক সহায্যপ্রাপ্তি সুবিধার্থে এসব প্রকল্প তালিকাভুক্ত করা হয়। তবে মূল এডিপিতে এই তালিকায় ছিল ১৪১টি প্রকল্প। সেখান থেকে ৯টি কমেছে। বৈদেশিক অর্থায়নের সম্ভাব্য উৎস হিসাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধরা হয়েছে চীন, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ভারত, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এবং কোরিয়া।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী শনিবার বলেন, এই তালিকায় আছে বলেই চলতি অর্থবছরে অর্থায়ন চূড়ান্ত হবে এমন নয়। এর মধ্যে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নেগোসিয়েশন চলবে। কোনোটির অর্থায়ন চূড়ান্ত হলে সেটি এই তালিকা থেকে বেরিয়ে নতুন অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দসহ ঢুকবে। যেগুলোয় অর্থায়ন নিশ্চিত হবে না, সেগুলো আবারও বরাদ্দহীন তালিকায় রয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলেই হয়তো প্রকল্পগুলো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। চূড়ান্তভাবে বিষয়টি দেখবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তবে তালিকায় থাকলে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসাবে সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী উভয় পক্ষেরই সুবিধা হয়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, এই তালিকায় থাকা মানে অর্থায়নের নিশ্চয়তা নয়। কেননা যতদিন চুক্তি স্বাক্ষর না হবে, ততদিন অর্থপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা কথাটি বলা যায় না। তবে এসব প্রকল্প উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের (আলোচনা) বিভিন্ন পর্যায়ে থাকতে পারে। সেজন্যই হয়তো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ তালিকায় রাখা হয় সরকারের অগ্রাধিকার বোঝানোর জন্য। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরেই যে এগুলোয় অর্থায়ন আসবে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যায় না।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, সেক্টরভিত্তিক বৈদেশিক সহায়তার জন্য নির্ধারিত প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬০টি রয়েছে পরিবহণ ও যোগাযোগ সেক্টরে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে প্রকল্প সংখ্যা ১৮টি। তৃতীয় সর্বোচ্চ গৃহায়ন ও গণপূর্ত সেক্টরে আছে ১৫টি । এছাড়া শিক্ষার ৯টি, পরিবেশ-জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদের ৭টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ৫টি, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়নে ৩টি প্রকল্প রয়েছে। আরও আছে স্বাস্থ্য সেক্টরে ৩টি, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবায় ৩টি, জনশৃঙ্খলার ৩টি, সাধারণ সেবায় ২টি, সামাজিক সুরক্ষায় ২টি, কৃষিতে ২টি এবং ডাক ও টেলিযোগাযাগ সেক্টরে ১টি প্রকল্প ।

সূত্র জানায়, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/লাকসাম দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩ লাখ ৩৫ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা এবং এডিবির ঋণ থেকে ধরা হয়েছে ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। এটি সরকারের উচ্চ অগ্রাধিকার হিসাবে ধরে চলতি মাস থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান শনিবার বলেন, আমি কাজ ছাড়া কোনো বিষয়েই কথা বলতে পারব না। ফাইল আসে সই করি আর কাজ দেখাশোনা করি। এর বাইরে কিছু জিজ্ঞাসা না করার অনুরোধ জানান তিনি।

এছাড়া ঢাকা ইনার সার্কুলার রুট (পার্ট-২) নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থের সম্ভাব্য উৎস হিসাবে বলা হয়েছে এআইআইবি। ঋণ পাওয়া গেলে আগামী জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ রয়েছে। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৫) সাউদার্ন রুট শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবির ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ২৭ হাজার কোটি টাকা। মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট (দ্বিতীয় পর্যায়, ইউনিট ৩, ৪) শীর্ষক প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৭ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা থেকে ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৩১ কোটি টাকা। ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে মোট ব্যয় ৮ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে এআইআইবির ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২৭২ কোটি টাকা।

সংশোধিত এডিপির বৈদেশিক অর্থায়ন প্রত্যাশার তালিকায় থাকা আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হচ্ছে-সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-থ্রি: রংপুর-তিস্তা-বুড়িমারি মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ১২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবি থেকে ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প। যমুনা নদীর ইকোনমিক করিডর উন্নয়ন প্রকল্প। আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি প্রকল্প এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের সান্তাহার থেকে বগুড়া-কাউনিয়া-লালমনিরহাট হয়ে বুড়িমারি পর্যন্ত বিদ্যমান রেললাইনের সমান্তরাল একটি নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য