শনিবার , ১২ মার্চ ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

সম্পদের বিবরণী জমায় অনাগ্রহ

প্রতিবেদক
ukadmin
মার্চ ১২, ২০২২ ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মূলত দুটি কারণে সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধির বিবরণী জমা দেওয়ায় আগ্রহ কম। প্রথমত, এই বিবরণী জমা না দিলে কী শাস্তি হবে, তা স্পষ্ট নয়। দ্বিতীয়ত, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিবছরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আয়কর বিবরণী জমা দেন, যেখানে সম্পদের বিবরণীও উল্লেখ করার বিধান রয়েছে। এ জন্য আলাদা করে পাঁচ বছর পরপর সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন না কর্মচারীরা।

সরকার প্রয়োজন মনে করলে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের বিবরণী এনবিআরের কাছ থেকে নিতে পারে। সুতরাং বিদ্যমান বিধিমালার বিষয়ে আরও ভেবে দেখা দরকার।

আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব

এ অবস্থায় বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধন করে আয়কর বিবরণীতে প্রতিবছর যেসব তথ্য দেওয়া হয়, সেসব তথ্য আলাদা ফরমে পাঁচ বছর পর নিজ নিজ প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার বিষয়টি যুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক চিঠিতে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সব সচিবকে চিঠি দেয়। চিঠিতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর আওতাভুক্ত সব সরকারি কর্মকর্তাকে তাঁদের নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল ও সম্পদ বিবরণীর তথ্যভান্ডার তৈরি করতে বলা হয়। একই সঙ্গে স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রয়ের বিষয়ে আচরণবিধিমালা (ধারা ১১,১২ এবং ১৩) অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতেও অনুরোধ করা হয়। তার আগে গত বছরের জুন মাসেও একই ধরনের চিঠিতে পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধির বিবরণী জমার বিষয়টি প্রতিপালন করতে বলেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সম্পদের বিবরণী জমায় অনাগ্রহ

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই দুই চিঠির পর কেউ কেউ সম্পদ বিবরণী জমা দিলেও অধিকাংশই তা মানেননি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিনি তাঁর বিভাগে সম্পদের বিবরণী জমা দিয়েছেন। মূলত আয়কর বিবরণীর তথ্যই সেখানে উল্লেখ করেছেন।

কী আছে আচরণবিধিতে

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯–এর ১১ ধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী তাঁর কর্মস্থল, জেলা বা যে এলাকার জন্য তিনি নিয়োজিত, সেই এলাকায় বসবাসকারী কোনো ব্যক্তির কাছে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি কেনা-বেচা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করতে হলে বিভাগীয় প্রধান বা সরকারের অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কোনো কর্মচারী কেনা-বেচা, দান, উইল বা অন্যভাবে বিদেশে কোনো স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। কোনো বিদেশি নাগরিক, বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কোনো প্রকার ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারবেন না। ১২ ধারার তথ্য বলছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীরা নিজে বা আবাসন প্রতিষ্ঠানের (ডেভেলপার) মাধ্যমে ভবন, অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট ইত্যাদি নির্মাণ বা কিনতেও মানা।

সংশোধনের চিন্তা

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, বিদ্যমান বিধিমালাটি সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে অন্যান্য কিছু বিষয়ের সঙ্গে সরকারি চাকরিজীবীদের জমা দেওয়া প্রতিবছরের আয়কর বিবরণীর সঙ্গে মিল রেখে আলাদা ছকে পাঁচ বছর পর সম্পদ বিবরণী জমার নিয়ম চালু করা হতে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ১৫ লাখের কিছু বেশি।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার  বলেন, এত বিপুলসংখ্যক কর্মচারীর সম্পদ বিবরণীর তথ্য পর্যালোচনা করতে গেলে আরও বিপুলসংখ্যক জনবলের প্রয়োজন হবে। তাই এনবিআর যেহেতু প্রতিবছর আয়কর বিবরণীর মাধ্যমে সম্পদের বিবরণী নিচ্ছে, সে ক্ষেত্রে কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দুদক সেই সম্পদের বিবরণী নিতে পারে। সরকারও প্রয়োজন মনে করলে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের বিবরণী এনবিআরের কাছ থেকে নিতে পারে। সুতরাং বিদ্যমান বিধিমালার বিষয়ে আরও ভেবে দেখা দরকার।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য