সোমবার , ১৪ মার্চ ২০২২ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

টিসিবির পণ্যের জন্যও হাহাকার

প্রতিবেদক
ukadmin
মার্চ ১৪, ২০২২ ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ

নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যে নিু ও মধ্য আয়ের মানুষ দিশেহারা। তাই সাশ্রয়ী দামে পণ্য কিনতে সরকারি সংস্থা-ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের সামনে অনেকেই ভিড় করছেন। তবে চাহিদার তুলনায় পণ্য কম থাকায় সেখানেও হাহাকার তৈরি হয়েছে। সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও অনেককেই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। পণ্য না পেয়ে কেউ কেউ অসহায়ত্ব প্রকাশ করে রাস্তার ধারেই কান্না করছেন। পণ্যবোঝাই ট্রাক দেখলেই পেছনে ছুটছেন অসহায় মানুষ। যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে পণ্য পাচ্ছেন, তাদের মুখে ফুটছে আনন্দের হাসি। রাজধানীতে টিসিবির একাধিক বিক্রয় পয়েন্ট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

সকাল ৯টা, বাজারের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য কিনতে রাজধানীর ১৮নং ওয়ার্ডের হাতিরপুল কাঁচাবাজারের সামনে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। তারা নিজ উদ্যোগে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। ঘণ্টা দুয়েক পর ট্রাক আসতেই পেছনে ছুটতে থাকেন। শুরু হয় বিক্রি কার্যক্রম। ঘণ্টা খানেক পর চার পণ্যের মধ্যে তেল বিক্রি প্রায় শেষের পথে। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। কার আগে কে পণ্য নেবে, এ নিয়ে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। সবাই টাকা বের করে অসহায়ত্বের হাত বাড়ায় টিসিবির ট্রাকের পণ্য বিক্রয়কর্মীর দিকে। পণ্য পেতে তৈরি হয় হাহাকার। এ সময় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তেলসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে এলে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ট্রাক চলে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলে পেছন ছুটতে থাকে মানুষ।

এ সময় সেখানে পণ্য না পেয়ে হালিমা বেগম (৫৫) চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে  আক্ষেপ করে বলেন, বাজারে জিনিসের অনেক দাম। বিশেষ করে তেলের জন্য এখানে এসেছিলাম। সঙ্গে পেঁয়াজ, ডাল ও চিনি কিনতে সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। তবে অনেক মানুষের ভিড়ে আমি ট্রাকের সামনেও যেতে পারিনি। তিনি বলেন, আমার স্বামী নেই। একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। সেখান থেকে মাসে ৯ হাজার টাকা পাই। বড় মেয়ে কলেজে পড়ে। সবকিছুর দাম বাড়ায় আমার সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। কয়েক মাস ধরে অনেক কষ্ট করে যা জুটছে, তা দিয়ে খেতে হচ্ছে। আজ কাজে না গিয়ে এখানে কম দামে পণ্য কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু পেলাম না। এতে কারখানা থেকে আজকের দিনে বেতনও পাব না। এমনভাবে আর চলতে পারছি না। গাড়িতে পণ্য বেশি থাকলে কিনতে পারতাম৷

টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির  বলেন, প্রতিটি ট্রাকে ৫শ থেকে এক হাজার কেজি চিনি, মসর ডাল, পেঁয়াজ ও সর্বোচ্চ এক হাজার লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ডিলাররা প্রতিটি পয়েন্টে সে পরিমাণে পণ্য বিক্রি করছে। তবে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অনেক মধ্যবিত্ত মানুষ লাইনে দাঁড়াচ্ছে। যে কারণে লাইন অনেক দীর্ঘ হচ্ছে। ট্রাকে পণ্য বিক্রি শেষ হলে অনেকেই পাবে না, সেটা স্বাভাবিক। তবে এবার রেকর্ড পরিমাণ পণ্য টিসিবি খোলাবাজারে বিক্রি করবে। এজন্য তিন-চার মাস আগে থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি, এ কার্যক্রম খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করা যাবে। সেভাবেই এবার মাঠে নামা হচ্ছে। পাশাপাশি কালোবাজারে যাতে এসব পণ্য বিক্রি না হতে পারে সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজার প্রধান সড়কের সামনে টিসিবির ভ্র্যাম্যমাণ ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস  বলেন, বাজারের তুলনায় কম দামে পণ্য কিনতে পেরে ভালো লাগছে। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত পণ্য কিনতে পারলাম। তবে কিছু বিশৃঙ্খলা আছে। বিক্রয়কর্মীরা খারাপ ব্যবহার করে। মানুষের তুলনায় পণ্য অনেক কম। লাইনে এত মানুষ অনেকেই পণ্য পাবে না। তাই বেশি করে পণ্য আনা গেলে সবার উপকার হতো।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য