চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বড় ভাই জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ ওরফে টিপুর বিরুদ্ধে খাসজমি দখলের যে অভিযোগ উঠেছে, সে ঘটনায় ছয়টি দলিল বাতিল ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মঈনউল ইসলামের সই করা চিঠিটি সম্প্রতি আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার সোনাপুর, তাজপুর (প্রকাশ্যে বাহেরচর) মৌজাটি সিএস জরিপ চলাকালে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে এ চরটি পুনরায় জেগে উঠলেও তা জরিপ করা হয়নি। তবে, সরকারি স্বত্ব-দখল বজায় রাখার সুবিধার্থে ০৭/৭৭-৭৮ নম্বর রিসেটেলমেন্ট মোকদ্দমার মাধ্যমে দখল অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যক্তির নামে অস্থায়ী জমাবন্দি তৈরি করা হয়।
জরিপ না হওয়ায় প্লটগুলোতে কোনো দাগ-খতিয়ান নম্বর পড়েনি এবং দখলদারদের সঙ্গে কোনোরূপ কবুলিয়ত সম্পাদিত হয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এসব জমিতে কোনো ব্যক্তি বা চাষির স্বত্ব বা মালিকানা তৈরি হয়নি। বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ার পরও ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই মেয়াদে পাঁচটি সাফ কবলা দলিল (নম্বর-৩২৫, ৩২৬, ৩৮১, ৪১৫ ও ৬৮১) ও একটি দানপত্র দলিল (নম্বর-৫৪০/৩০.০৫.২০১৯) নিবন্ধনের মাধ্যমে ৫৬ দশমিক ৫২৫ একর সরকারি খাসজমি বেহাত হয়েছে। তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার অসীম-কল্লোল এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন মর্মে ধারণা করা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, চিঠিতে উল্লেখ করা দলিলগুলো জাওয়াদুর ও তার সহযোগীদের নামে করা হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সঙ্গে যোগসাজশ করে নামমাত্র মূল্যে এসব দলিল করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দলিলগুলো বাতিলের জন্য যথাযথ নির্দেশনা প্রদান এবং উল্লিখিত অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
সম্প্রতি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণে জাল–জালিয়াতির অভিযোগের সঙ্গে জাওয়াদুর রহিমের নাম আলোচনায় আসে। চাঁদপুর সদরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে যে স্থানে নতুন ক্যাম্পাস তৈরির জায়গা ঠিক করা হয়েছে, জাওয়াদুর সেখানেও ৬ দশমিক ৯ একর জমি (৬০৯ শতাংশ) কিনে রেখেছেন বলে জানা গেছে।