লিবিয়ায় গিয়ে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি জাহিদুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি ওই দেশের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
এছাড়া এনটিভিও জাহিদ রহমানের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সোমবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের বরাতে এনটিভি জানায়, লিবিয়া ভ্রমণে গিয়ে পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর সন্ধান মিলেছে এনটিভির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট জাহিদুর রহমানের। একই সঙ্গে সন্ধান মিলেছে সঙ্গে থাকা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম টিপু ও গাড়িচালক লিবিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ খালেদেরও।
তবে জাহিদের স্ত্রী তাসলিমা রহমান বলেন, জাহিদের উদ্ধার হওয়ার খবর আমি টিভির স্ক্রলে দেখেছি। তবে স্থানীয় এমপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ বিষয়ে আমাদের এখনো কিছু জানাননি।
সাংবাদিক জাহিদুর রহমান (৪৮) সাভারের জালেস্বর এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ থেকে ৩ মার্চ টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে পারিবারিক ভিসা নিয়ে লন্ডনে যান। সেখান থেকে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ঘুরে ২১ মার্চ তিনি লিবিয়ায় পৌঁছান।
জাহিদুর রহমানের ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, ২২ মার্চ তিনি ত্রিপোলী পৌঁছে ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ছবি যুক্ত করে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, গৃহযুদ্ধ কবলিত দেশটিতে প্রবেশ ছিল রীতিমতো বেশ চ্যালেঞ্জের। লন্ডনে যাওয়ার আগেই বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ঢাকা থেকে ভিসা সংগ্রহ করেন। অবশ্য লন্ডন থেকে জাহিদুর রহমানের একাধিক রিপোর্ট এনটিভিতে প্রচার হয়েছে।
সূত্র জানায়, যুদ্ধাবস্থার কারণে লিবিয়ায় অনেক বছর ধরে বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো বন্ধ ছিল। তবে গত মাসে লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কর্মী যাওয়া শুরু হয়নি। সাংবাদিক জাহিদ অবশ্য ঢাকা থেকে লিবিয়ার ভিসা নিয়ে গেছেন।
এর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছিলেন, লিবিয়ায় সাংবাদিক জাহিদুর রহমানসহ তিনজন নিখোঁজের খবর পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে দূতাবাস থেকে খোঁজ নিয়ে জানাতে বলা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে জানতে পারে- জাহিদুর রহমান, প্রকৌশলী ও তাদের গাড়িচালককে কে বা কারা অপহরণ করেছে।
২২ মার্চ দুপুরে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির ময়দানে সোহাদা নামে পরিচিত গ্রিন স্কয়ারে গিয়ে একাধিক ছবি তোলেন জাহিদ। সেখানে লিবিয়ায় জাতীয় পতাকা হাতে এক বৃদ্ধের সঙ্গে তিনি একাধিক ছবিও পোস্ট করেন নিজের ফেসবুকে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম টিপু এবং তাদের গাড়িচালক মোহাম্মদ খালেদ।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গাদ্দাফির সময় এই এলাকাটি গ্রিন স্কয়ার নামে পরিচিত ছিল। প্রায় এক যুগ পর লিবিয়ার বিদ্রোহীরা এই জায়গাটি তাদের নিয়ন্ত্রণ নেন। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিহতদের স্মরণে তারা এই জায়গাকে শহিদদের স্মরণে মার্টিয়াড স্কয়ার নামকরণ করে। সেখানে গিয়ে লিবিয়ার পতাকা হাতে ছবি তোলার পরপরই সরকারি লোকজনের সন্দেহ হয়। এর জের ধরে গ্রিন স্কয়ারে আশপাশ থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।