গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বাংলাদেশিদের সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ করা দরকার, তারাও মুক্তিযোদ্ধা। তারা যদি সেদিন প্রবাসে রাস্তায় না নামতেন, আন্দোলন না করতেন, তাহলে বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারতেন না।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের সম্মাননা ও স্বীকৃতি জানাতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’র উদ্যোগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের টেরেস প্যাভিলিয়নে এই আয়োজন করা হয়।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসে আন্দোলন সংগ্রামে ও বিদেশিদের জনমত গঠনে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর অবদান চিরস্মরণীয়। অথচ সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও জেনারেল ওসমানীর জন্মদিন ও মৃত্যুদিবস পালন করে না। সরকারের উচিত রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের স্মরণ করা। বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাহায্য ও মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
দেশের জনগণকে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ দিতে সরকারের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তুলে নেওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশ সরকার, বিশেষ করে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সহযোগিতা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এই অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী স্টিফেন টিমস এমপি। তিনি বলেন, ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং আমি মনে করি এই উদ্যোগ এখানকার বাংলাদেশিদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
তিনি অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বর্তমান প্রজন্মের প্রতি তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’র প্রেসিডেন্ট ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদানের মাধ্যমে শুরু হয় সম্মাননা প্রদান। অনুষ্ঠানে লন্ডন ছাড়াও গ্রেট ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর থেকে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা উপস্থিত হতে পারেননি বা মারা গেছেন তাদের পক্ষে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য আপসানা বেগম, স্কটিস পার্লামেন্ট সদস্য ও শ্যাডো মিনিস্টার ফয়সল চৌধুরী এমবিই, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আফতাব আলী, মানবাধিকার কর্মী তালেয়া রেহমান, গণমাধ্যম কর্মী, ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’র কর্মকর্তাসহ অনেকেই।
‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ প্রায় বছরব্যাপী অনুসন্ধানের মাধ্যমে সম্মাননা ও স্বীকৃতি প্রদানের জন্য ১০০ জন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠকের তালিকা তৈরি করে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সম্মাননা প্রাপ্তদের নাম ও পরিচিতিসহ একটি স্মারক প্রকাশ হয়েছে।