রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে ফেসবুক লাইভ করায় সৈয়দা রত্না নামে এক নারী ও তার ছেলে ঈসা আব্দুল্লাহকে আটকের ১২ ঘণ্টা পর তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে তেঁতুলতলা মাঠ থেকে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে সৈয়দা রত্না মাঠে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে লাইভ করছিলেন। লাইভ করার সময় তাকে আটক করা হয়। তবে এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রাতে সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র পাল।
তিনি বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সৈয়দা রত্না ও ছেলে ঈসা আব্দুল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে রাতে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি কাজে তারা আর বাধা দিবেন না এই অঙ্গীকারে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কলাবাগানের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তেঁতুলতলা মাঠের এক বিঘা জমি একজন বিহারির মালিকানায় ছিল। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর তিনি আর দেশে ফেরেননি। সেই জায়গাটিতে স্থানীয় শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করতো।
সরকারি খাসজমি হিসেবে নথিভুক্ত এই ফাঁকা জায়গাটিতে থানা করতে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এরপর থেকেই সেই জায়গাটি খেলাধুলার জন্য ফাঁকা রাখার দাবি উঠেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খেলার মাঠের সংকট থাকলেও কলাবাগানে সিটি করপোরেশনের খেলার মাঠ আছে। কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডের পাশেই সেই মাঠ।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে সৈয়দা রত্নার মেয়ে শেউতি শাহগুফতা বলেন, গতকাল রাত ১টার দিকে মাঠে ট্রাক নিয়ে আসে ইট, সুরকি ফেলার জন্য। সকাল থেকে মাঠে ইট, সুরকি ফেলা শুরু হয়। আম্মু সকাল ১০টার দিকে বের হয়ে মাঠের এখান থেকে একটা ফেসবুক লাইভ করেন। তখন এক কথা দুই কথায় পুলিশ মাকে ধরে পুলিশ ভ্যানে ওঠায়।
সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে আমার ছোট ভাই ঈসা আব্দুল্লাহ আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে, বুবু আম্মুকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এ কথা বলে সে ফোন কেটে দেয়। আমি তাকে ফোন ব্যাক করলে ও বলে, বুবু আমাকেও ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এর পর দুইবার ফোন দিলে ফোন কেটে দেয়। এরপর থেকে আমার ভাইয়ের ফোন বন্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিউমার্কেট-কলাবাগান জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে ঈসা আব্দুল্লাহকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।