শনিবার , ১১ জুন ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

এটা স্রেফ ডলার পাচারকারী ও অর্থ লুটেরাদের বাজেট : বিএনপি

প্রতিবেদক
ukadmin
জুন ১১, ২০২২ ২:৫৮ অপরাহ্ণ

২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ‘বাস্তবতা বর্জিত’ বলে অভিহিত করেছে বিএনপি। এই বাজেট কেবলমাত্র সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের জন্য করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি আরও বলছে, এটা স্রেফ ডলার পাচারকারী ও অর্থ লুটেরাদের বাজেট।   

শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাজেট কোনো অর্থেই সাধারণ মানুষের বাজেট নয়। এটা স্রেফ ডলার পাচারকারী ও অর্থ লুটেরাদের বাজেট। এবারের বাজেট বর্তমান কঠিন সময়ের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ বাস্তবতা বর্জিত একটি বাজেট, এটি কেবলমাত্র সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের জন্যই করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়’ প্রত্যাবর্তন শীর্ষক বাজেট বক্তৃতায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন মন্ত্রী।

এ বাজেট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, পাচারকারীরদের অর্থকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা কিংবা বিদেশে ভোজ করার বৈধ্যতা দিতেই এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। আরও পরিষ্কার অর্থে বললে সরকারের লুটেরা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী স্বজনদের অর্থ পাচার কবার সুযোগ করে দিতেই এটা করা হয়েছে। অথচ সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহৃত চাল, ডাল, লবণ, চিনি, গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির মূল্য হ্রাসের কোনো কার্যকরী কৌশল না নিলেই শুধুমাত্র নিজেদের বিত্ত-বৈভব বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বাজেট প্রণীত হয়েছে।

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর প্রস্তাব বাতিল চায় বিএনপি
যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে তাতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিদেশে অর্জিত অর্থ দেশে আনার বিষয়ে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান সংযোজনের একটি প্রস্তাব করেছেন।

এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিদেশে অর্জিত সম্পদ দেশে আনা হলে স্থাবর সম্পত্তির জন্য ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তির জন্য ১০ শতাংশ এবং নগদ অর্থ আনতে সাত শতাংশ হারে কর দিলে ওই সম্পদের বিষয়ে প্রশ্ন তুলবে না আয়কর কর্তৃপক্ষ।

এ প্রস্তাবকে আইনের পরিপন্থি অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই প্রস্তাব কেবল অনৈতিক নয়, এটা রীতিমতো আইনের সাথে সাংঘর্ষিক এবং দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে ক্ষমা ঘোষণার সামিল। এতে বর্তমানে চলমান অর্থ পাচারের মামলাগুলোর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অর্থ পাচারকারীরা আরও উৎসাহিত হবে, টাকা আরও পাচার হওয়ার প্রবণতা তৈরি হবে। এটা অন্যায়, অপরিণামদর্শী ও আত্মঘাতী পদক্ষেপ।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের তথাকথিত জিরো টলারেন্স নীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং অসাংবিধানিক। গত ১৪ বছরে সরকারের ঘনিষ্ট লোকজনই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করে নিয়েছে। এখন এই ঘোষণার মাধ্যমে সরকার ওইসব পাচারকারীদের অবৈধ অর্থ বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দিল। যা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক যেকোনো মানদণ্ডে অগ্রহণযোগ্য। আমরা পাচারকৃত অর্থ বৈধ করার এই ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

একই সঙ্গে পাচারকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং পাচারকারীদের অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

প্রস্তাবিত বাজেটের নানা দিকের সমালোচনা করে তিনি বলেন,  এই বাজেট হচ্ছে অব দ্য বিজনেস ম্যান, বাই দ্য বিজসেন ম্যান এবং ফর দ্যা বিজনেস ম্যান। অর্থাৎ এটা ব্যবসায়ীবান্ধব বাজেট। জনকল্যাণের কোনো কথা এতে স্থান পায়নি। মূল্যস্ফীতিতে জনমানুষের যখন নাভিশ্বাস, তাদের স্বস্তি দেওয়ার কোনো কিছু নেই।  করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি, স্বস্তি পায়নি মধ্যবিত্তরা। বাজেটে যেসব পণ্যের আমদানি কর বাড়ানো হয়েছে সেগুলোর ভোক্তা মূলত মধ্যবিত্তই।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ সবই গতানুগতিক। করোনাকালে এই খাতে যেসব দুর্বলতাগুলো প্রকাশ পেয়েছে সেগুলো পূরণের জন্য কোনো ধরনের পদক্ষেপ বা দিক নির্দেশনা নেই। করোনাকালে সরকারের মন্ত্রীরা যেসব প্রতিশ্রুতির কথা শুনিয়েছিলেন, বাজেটে তার প্রতিফলন হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, বাজেটে স্বাস্থ্য সেক্টারকে চরমভাবে অবহেলা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেক্টরে বরাদ্দ কমেছে। গতবছর বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। আর এই বছরে বাজেটে দেখানো হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। সামনের অর্থবছরে বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। যেটা আসলে সঠিক নয়। কারণ ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকার মধ্যে করোনা মোকাবিলার জন্য রাখা হয়েছিলো ৫ হাজার কোটি টাকা। তাহলে ৫ হাজার কোটি বাদ দিলে দেখা যাবে যে, প্রকৃতপক্ষে ৩১ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। এটা জনগনের সাথে প্রতারণা।

বাংলাদেশে কাজ করছে ‘আওয়ামী ইকোনমিক মডেল’
সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে মুক্তবাজার অর্থনীতি কাজ করছে না। এখন কাজ করছে আওয়ামী ইকোনমিক মডেল, তাদের উপকার করার জন্য, তাদের দুর্নীতির জন্য, তাদের পকেটে টাকা নেওয়ার জন্য, তারা রাষ্ট্রের প্যাট্রোনাইজেশনের ব্যবসা করার জন্য। এভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিটা চলছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকাগুলো নিচ্ছে সব কিছুর দাম বাড়িয়ে। এই টাকাগুলো থেকে তারা (ক্ষমতাসীনরা) কীভাবে সুবিধা নেবে তাকে মাথায় রেখে একটা অর্থনৈতিক মডেল তারা তৈরি করেছে। সেই মডেলের ভিত্তিতে আজকের বাজেটটা তৈরি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান ও নাসের রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ - ব্যাবসা-বাণিজ্য