ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) আমেরিকায় বসে ফের অফিস করার প্রস্তাব নাকচ করেছে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় ঢাকা ওয়াসা বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের ব্যক্তিগত কারণে ছুটির প্রয়োজন হলে তিনি ছুটি নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (ডিএমডি) দায়িত্ব দিয়ে যেতে হবে। যদিও এ ব্যাপারে বৈঠকে ভিন্নমত ব্যক্ত করেন ঢাকা ওয়াসার এমডি।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসার বোর্ড সভা শুরু হয়। শেষ হয় বিকাল সাড়ে ৬টায়। ঢাকা ওয়াসার এমডি সভায় ২০ ভাগ পানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই প্রস্তাব ঢাকা ওয়াসা উপস্থিত সকল সদস্য নাকচ করেন।
পরে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা ৫ ভাগ মূল্য সমন্বয়ের প্রয়োজন বাড়ানোর পক্ষে সম্মতি দিলে বোর্ড সদস্যরা তা মেনে নেন। তবে এমডি’র ‘ভার্চুয়াল অফিসের’ প্রসঙ্গ উঠলে বোর্ড সদস্যরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। কয়েকজন সদস্য এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত বিধি-বিধানে এমন কোনো সুযোগ না থাকলেও এমন প্রস্তাব উত্থাপন করে বোর্ড বিব্রত করা হচ্ছে। যদিও কয়েকজন সদস্য প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ের পাঠানোর পক্ষে মতামত দেন। এ প্রস্তাবের পক্ষে বোর্ডের বেশিরভাগ সদস্য ভিন্ন মত প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নানা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা বলেন, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড সভায় এমডির ভার্চুয়াল অফিসের প্রস্তাব নাকচ করা হয়েছে। আর ২০ ভাগ পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও বোর্ড ৫ ভাগ পানির মূল্য বৃদ্ধি করেছে। চলতি মাস থেকে অতিরিক্ত মূল্য কার্যকর হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস ভার্চুয়াল অফিসের অনুমতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান ঢাকা ওয়াসার এমডি। তিন মাসের অনুমতি নেওয়া থাকলেও সেখানে থেকে চার মাস ভার্চুয়াল অফিস করেন তিনি। ওইবার ছুটিতে যাওয়ার অল্প কিছুদিন আগে তার চুক্তি নবায়ন করে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড। তখন তার কোনো ছুটি পাওনা ছিল না। এরপরও টানা চার মাস আমেরিকা থেকে ভার্চুয়াল অফিস করেন বহুল আলোচিত ঢাকা ওয়াসার এমডি। ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এরমধ্যে কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়।