শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হওয়া, সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকায় লজ্জিত ও বিব্রত শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এই তথ্য জানান।
গত সোমবার রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় পাশাপাশি পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আয়োজন করা হয়েছিল থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
এ বিষয়ে দীপু মনি বলেন, তিনি একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গেছেন ঢাকার দক্ষিণখানে। সেখান থেকে চলে আসার পর তিনি জেনেছেন, তার আশপাশে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এই মাঠ ব্যবহার করে একটি কমপ্লেক্সের মতো। সেখানে রাজনৈতিক সমাবেশটি হয়েছে। পরে খোঁজ নিলে তাঁকে বলা হয়, দুপুর দুইটা পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে, কিন্তু আসলে কতটা চলেছে, তা তিনি জানেন না। কিন্তু যখনই প্যান্ডেল করা হয়েছে, তখন শিক্ষা কার্যক্রম যদি চলেও থাকে তাহলে খুব নির্বিঘ্নে চলেছে, তা মনে করার কারণ নেই। সে জন্যই তিনি ভীষণভাবে লজ্জিত ও দুঃখিত। কারণ, তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।
দীপু মনি বলেন, দু-একটি সংবাদমাধ্যমে খবরটি এসেছে। যেহেতু তিনি শিক্ষামন্ত্রী, তাই এ বিষয়ে বলতে চান। সবাই বলছেন, খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। খোলা মাঠ বলতে এখন শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠ। এর বাইরে খুব বেশি মাঠ নেই। এলাকাভিত্তিক রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়—যে অনুষ্ঠানই করা হোক না কেন, দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিকল্প কোনো মাঠ না থাকার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ-প্রাঙ্গণ ব্যবহার করা হয়।
দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের একটি মোটামুটি নির্দেশনা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সম্পর্কিত অনুষ্ঠান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করার। কিন্তু বাইরের কোনো অনুষ্ঠান নিরুৎসাহিত করি। কোনো এলাকায় হয়তো বিকল্পই নেই। কিছুই করার থাকে না। তখন বলা হয়, যেন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না হয়। আমি আসলেই খুবই বিব্রত। আমার অজান্তেই ঘটনাটি ঘটেছে।’
দীপু মনি আরও বলেন, তিনি জানেন না সেখানে বিকল্প মাঠ ছিল কি না। যদি না থাকে, তাহলে তিনি অনুরোধ করবেন, যাঁরাই এই অনুষ্ঠান করেন, সেটি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়—যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন, বিকল্প জায়গায় করার। আর যদি কোনো এলাকায় বিকল্প না থাকে, তাহলে যেন ছুটির দিনে করা হয়। জায়গাটি কোনোভাবে নষ্ট হবে না, ক্ষতিগ্রস্ত হবে না—এই বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা নিয়ে যেন করা হয়।