ভোলায় পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতারের ভয়ে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে আহত বিএনপি কর্মীরা তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন। সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ কর্মীর খোঁজ মেলেনি।
রোববার রাতে ভোলা সদর মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার সকালে এই খবর আহতদের কাছে এসে পৌঁছলে তারা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই স্বেচ্ছায় তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল ত্যাগ করে।
ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. জসিম বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা এবং স্বেচ্ছাসেবক দলকর্মি হত্যার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করা হয়। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৪ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এতে ৭৪ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে, বাকিরা অজ্ঞাতনামা আসামি। মামলা এবং পুলিশের গ্রেফতার অভিযানের খবর পেয়েই সটকে পরে ১৬ কর্মী।
সার্জারি ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স পূর্নিমা মন্ডল বলেন, গানশর্টে আহত হয়ে ২১ জন বিএনপির নেতাকর্মী এই ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিল। রোববার দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে তারা ভর্তি হয়। এদের মধ্য ৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠনো হয়। বাকি ১৬ জন চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু তাদের সোমবার সকাল থেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি সকালের চিকিৎসাও কেউ নেয়নি। ২১ জনের মধ্য রাব্বি নামে একজনের নামে কেবিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তিনি কেবিনে না গিয়ে হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন।
ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বেডে ছিলেন রুবেল ও চার নম্বর বেডে ছিলেন মনির। তারাও সকাল ১০টায় বেড ছেড়ে চলে গেছেন।
ওই ওয়ার্ডে এক রোগীর স্বজন জাফর খাঁ বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ৬ জন রোগীকে সকাল ১০টার মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করতে দেখেছি। এ সময় বলতে শুনেছি, ভোলায় মামলা হয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারে। তাই যে যেভাবে পেরেছে চলে গেছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, ভোলার ঘটনায় বরিশালে হাসপাতালে ভর্তি বিএনপির নেতাকর্মীদের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা ছিল না।
রোববার ভোলা জেলা বিএনপির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় আব্দুর রহিম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী নিহত হয়েছেন। ৬ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।