মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটিতে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের চিফ অব পুলিশ সামিটে (ইউএনকপ) অংশ নেওয়ার জন্য ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদকে মনোনীত করা হয়েছে। ছয় সদস্যের মনোনীত এই প্রতিনিধি দলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি নাসিম ওয়াজেদ ও এআইজি মোহাম্মদ মাসুদ আলমের নাম রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (পুলিশ-৩ শাখা) হারুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রধান অর্থ ও হিসাব কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দফতর। র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হিসেবে বেনজীর আহমেদ ছাড়াও বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খান ও র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনয়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জাড়ি করা হয়। এর মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ড. বেনজীর আহমেদ ও র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতায় এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জোর প্রচেষ্টা চালানো হয়। এমনকি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ভারতের সহযোগিতা চাওয়ার কথাও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের র্যাব ও এর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের চিফ অব পুলিশ সামিট (ইউএনকপ)। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে এই সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের পুলিশ প্রধানসহ মনোনীত প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এই সফলের পুরো অর্থ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ বা পুলিশের বাজেট থেকে খরচ করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদকে মনোনীত করা হয়েছে। তবে বেনজীর আহমেদকে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ভিসা দিয়েছে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কেউ কিছু জানাতে পারেননি।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আয়োজক দেশ ও নিউইয়র্কে সদর দফতর থাকার কারণে জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা আমন্ত্রিত অতিথিদের ভিসা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘ অধিবেশনে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তিদের ভিসা না দেওয়ার উদাহরণও রয়েছে। সেই হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদকে ভিসা দিতেও পারে, আবার নাও দিতে পারে।
যোগাযোগ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েল উপ-সচিব মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়সহ সবার নামে জাতিসংঘ থেকে ইনভাইটেশন এসেছে, জিও হয়েছে। এখন ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ইউএনকপে অংশগ্রহণ করবো।’