রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জন্য ২০১৩ ও ২০১৪ সালে প্রায় দেড় কোটি টাকায় তিনটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল কালার আলট্রাসাউন্ড মেশিন কেনা হয়। যা অন্তত ১০ বছর সক্রিয় থাকার কথা। কিন্তু মাত্র তিন বছরের মাথায় মেশিনগুলো দফায় দফায় নষ্ট হতে থাকে। অলসভাবে পড়ে থাকা যন্ত্রপাতি মেরামত দেখিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা গচ্চাও যায়।
সর্বশেষ ২০২০ সালে সম্পূর্ণ অকেজো দেখিয়ে মেশিন তিনটি স্টোর রুমে পাঠানো হয়। এরপর স্টোর রুম থেকে হঠাৎ একদিন নষ্ট মেশিনগুলো উধাও হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাকেই প্রশ্ন জাগে, নষ্ট মেশিন কে চুরি করবে? অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেল, চুরি নয়, নষ্ট মেশিন বেসরকারি কোম্পানি ইউনি হেলথ কেয়ারের কাছে গোপনে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। দেড় কোটি টাকার আলট্রাসাউন্ড মেশিন বিক্রি হয়েছে ‘ভাঙারি’র দামে মাত্র লাখ টাকায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে মেশিনগুলো আবার ফেরত দেওয়া হয়। নাটকীয়তা এখানেই শেষ নয়। ফেরত আসা মেশিন যাচাই-বাছাই করে দেখা গেল, অন্য মেশিন জমা দেখিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে অসাধু চক্র।
বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডিজিটাল কালার আলট্রাসাউন্ড মেশিন ক্রয়ে দুর্নীতি ও নষ্ট মেশিন হঠাৎ গোডাউন থেকে হাওয়া হওয়ার পেছনের গল্প খুঁজতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
২০২০ সালে সম্পূর্ণ অকেজো দেখিয়ে মেশিন তিনটি স্টোর রুমে পাঠানো হয়। এরপর স্টোর রুম থেকে হঠাৎ একদিন নষ্ট মেশিনগুলো উধাও হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাকেই প্রশ্ন জাগে, নষ্ট মেশিন কে চুরি করবে? অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেল, চুরি নয়, নষ্ট মেশিন বেসরকারি কোম্পানি ইউনি হেলথ কেয়ারের কাছে গোপনে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। দেড় কোটি টাকার আলট্রাসাউন্ড মেশিন বিক্রি হয়েছে ‘ভাঙারি’র দামে মাত্র লাখ টাকায়।
এ বিষয়ে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দুদকের অনুসন্ধানে সরাসরি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অফিস সহায়ক মো. মাসুদ রানা (সুমন), অফিস সহায়ক (সাময়িক বরখাস্ত) মোজাফফর হোসেন বাবুল, স্টেরিলাইজার কাম মেকানিক ও ওয়ার্ড মাস্টার মো. বিল্লাল হোসেন এবং ইউনি হেলথ কেয়ারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার রাজীবের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। যে কারণে অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক নাজমুল হাসানের সুপারিশে কমিশন থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু কমিশন অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে, তাই যে কোনো সময় মামলা দায়ের হতে পারে। যদিও পেছনের বড় বড় কারিগর এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে বলে দুদক অনুমান করছে। দালিলিক প্রমাণ পাওয়ার অপেক্ষায় আছি আমরা। তাছাড়া মেশিনগুলা দ্বিগুণের বেশি দামে ক্রয় করা হয়েছিল বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। যে কারণে অত্যাধুনিক ডিজিটাল কালার আলট্রাসাউন্ড মেশিন ক্রয়ের দুর্নীতি খুঁজতে পৃথক অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে।