বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনোদিন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। সেইসঙ্গে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই বিএনপি নেতাকর্মীদের জেলে পাঠানো হয়। ময়মনসিংহের বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আজ জেলে। টাঙ্গাইলের আব্দুস সালাম পিন্টু, নেত্রকোনার সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেক নেতা মিথ্যা মামলায় জেল খাটছেন। সব রাজবন্দিকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে আসার সুযোগ দিতে হবে।’
শনিবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে ময়মনসিংহ নগরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিটিউট মাঠে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই সরকার ও শেখ হাসিনার সমালোচনা করা যায় না। জনগণের মুখ বন্ধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা গড-নাকি ঈশ্বর? কেন তার সমালোচনা করা যাবে না? যারা শেখ হাসিনাকে ঈশ্বর ও বিধাতা মনে করে তাদের সে ধারণা ভেঙে দিয়ে মানুষের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার বলেছিল ঘরে ঘরে বেকারদের চাকরি দেবে। কিন্তু এখন চাকরি গেলো কোথায়? এখন চাকরি হয় আওয়ামী লীগ করলে কিংবা ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিতে পারলে। এর বাইরে সাধারণ মানুষের চাকরি হয় না। ঘরে ঘরে বেকাররা বসে আছে।’
সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘এই সরকার এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গুলি করে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। গুলি করে হত্যা করে জনগণকে আর ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের মানুষ এই সরকারকে লালকার্ড দেখিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে দেবে।’
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জনগণ আজ জেগে উঠেছে। কোনও বাধা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মী ও জনগণকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বাধ্য করা হবে।’
এর আগে সকাল থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করেন। পলিটেকনিক ইনস্টিটিটিউট মাঠে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হয়। বিকাল ৩টায় বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মঞ্চে আসেন।