বৃহস্পতিবার , ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

বাংলাদেশের মাদার তেরেসা “সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু”

প্রতিবেদক
ukadmin
ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩ ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ

সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু বাংলাদেশের অন্যতম একজন শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সঙ্গীতপ্রেমী । তাঁর বাবা সৈয়দ নুরুল আবসার ছিলেন নারী শিক্ষার অন্যতম পথিকৃৎ । বাবার কাছেই ছোট্ট বানুর ছবি আকার হাতেখড়ি । বাবা আদর করে ডাকতেন গুলু নামে । পাঁচবছর বয়সেই তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন রঙ আর তুলি । কচি হাতে রঙতুলি দিয়ে ইকবালমান্দ বানু তখণ থেকেই শুরু করেন আকাবুকি । প্রকৃতির ঋতু বদলের নানা রঙে তিনি মুগ্ধ হতেন । নীল আকাশে ডানা মেলে উড়ে যাওয়া পাখি কিংবা রঙ্গিন প্রজাপতির রঙ তাকে দারুণ ভাবে আকৃষ্ট করতো । তিনি রঙ তুলির ছোঁয়ায় সেই প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তুলতেন ।

বাবা বলতেন আমার স্বপ্ন তুমি একদিন অনেক বড় শিল্পী হবে । তোমাকে বিলেতের অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করতে হবে । কিন্তু ছয় বছর বয়সেই বাবাকে হারান ছোট্ট গুলু । কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি । পড়াশুনার পাশাপাশি তার শিল্পচর্চা চালিয়ে যান । ছবি আকার পাশাপাশি তিনি নাচ, কবিতা আবৃত্তি আর সঙ্গীত চর্চা করেন । বড় হয়ে বাবার ইচ্ছে পূরণে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ফাইন আর্টসে । এরই মাঝে ১৯৬০ সালে বিয়ে হয় জনাব মাহবুব আলী খানের সঙ্গে । তিনিও নারী শিক্ষা প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন ।

বিয়ের পর স্বামীর আগ্রহে পড়াশুনা চালিয়ে যান ইকবালমান্দ বানু । পাশাপাশি বিএ পাস কোর্সে তিনি সম্মিলিত মেধা তালিকায় স্থান করে নেন । সন্তান জন্মের পরে তিনি ইংলিশে অনার্স এবং ইসলামীক ইতিহাসে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে । বাবার স্বপ্নপুরন করতেই, ৭৮ বছর বয়সে তিনি ‘Painting in China from the Tang Dynasty to the Present Day’ বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে । উক্ত কোর্সে তিনি বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ছাত্রী হিসাবে সাফল্যের সাথে অংশগ্রহণ করেন ।

 

সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু অন্তরালে থেকে নিরলস ভাবে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন । প্রচার বিমুখ এই নারী নিজের পুরোটা জীবন উৎসর্গ করেছেন সমাজের অসহায়, অবহেলিত, নিগৃহীত মানুষের জন্য । উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া নিজের সম্পদকে ভোগ বিলাসে ব্যয় না করে, নিঃস্বার্থ ভাবে দান করেছেন দরিদ্র, অবলম্বনহীন মানুষের জন্য । গড়ে তুলেছেন ‘সুরভী’ নামক প্রতিষ্ঠান । যার মাধ্যমে সমাজের ছিন্নমূল শিশুদের শিক্ষা দেবার পাশাপাশি গড়ে তোলা হচ্ছে একেকজন দক্ষ কর্মক্ষম মানুষ হিসাবে ।১লা ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে সুরভীর ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হল ।

 

সুরভীর চেয়ারম্যান সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু তাঁর জীবনের স্বর্ণালি সময়টুকু পার করেছেন অসহায়, অবহেলিত, নিপীড়িত মানুষের সেবা করে । মানুষের সেবা করাই তাঁর ধর্ম । তাইতো চল্লিশ বছরেরও বেশী কাল ধরে তিনি তার সমস্ত সম্পদ দান করে দিয়েছেন মানবতার কল্যাণে । অসহায় অবহেলিত ছিন্নমূল মানুষের মাঝে আলোকবর্তিকা হয়ে তাদের অন্ধকার জীবনে আশার আলো দেখিয়েছেন তিনি ।

 

শুভ্রতার প্রতীক হিসাবে বাংলাদেশের গরিব দুঃখী অসহায় মানুষের মাঝে নীরব বিপ্লব ঘটানো সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু তাদের কাছে মাথার উপরের ছাদ, বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে চলা নিশ্চিত আশ্রয়, তাদের খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষার যোগানদাত্রী, তার চেয়েও বড় কথা তিনি হলেন অকৃপণ মাতৃস্নেহের আধার, বেঁচে থাকার অবলম্বন । ‘বাংলাদেশের মাদার তেরেসা সৈয়দা ইকবালমান্দ বানু বাংলাদেশের সমাজ সেবায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১৯৯৫ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক লাভ করেন ।

সর্বশেষ - বাংলাদেশ