বুধবার , ১৬ মার্চ ২০২২ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
TableTalkUK
  1. ক্রাইম সিন
  2. খেলাধুলা
  3. জেলার খবর
  4. তথ্য-প্রযুক্তি
  5. প্রবাসের কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. ব্যাবসা-বাণিজ্য
  8. ভিডিও সংলাপ
  9. মিডিয়া
  10. শিক্ষাঙ্গন
  11. সকল সংবাদ

ঘুষ লেনদেনের কল রেকর্ড ফাঁস যোগদানের ৫৮ দিনেই সুন্দরগঞ্জের ওসি প্রত্যাহার

প্রতিবেদক
ukadmin
মার্চ ১৬, ২০২২ ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ

গাইবান্ধা শহরের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যা মামলার এক আসামির স্বজনের কাছে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় যোগদানের ৫৮ দিনের মাথায় সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুজ্জামানকে গত মঙ্গলবার রাতে জেলা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে।

এরআগে ওসি তৌহিদুজ্জামান গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ওসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন । বুধবার সকালে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় তদন্ত করার জন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

জানা যায়, গত বছরের ১০ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাসা থেকে জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর (৪৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম মাসুদসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপর দুইজন আসামি হচ্ছেন রুমেল হক ও খলিলুর রহমান।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তৎকালীন গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ওসি ও বর্তমানে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে মামলার এক আসামির স্বজনের ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হয়। মামলার অভিযোগ পত্র থেকে এক আসামির নাম বাদ দেওয়া ও আইনের ধারা কমিয়ে দিতে টাকা লেনদেনের কথাবার্তা হয়। কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত প্রদানে ফোনালাপ হয়। পাঁচ দফায় প্রায় ১৭ মিনিটের ফোনালাপ হয়। এদিকে ফোনালাপটি দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। এনিয়ে গত সোমবার থেকে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাসা থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মাসুদ রানা দাদন ব্যবসা করতেন। প্রায় দুই বছর আগে মাসুদ রানার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী। এই টাকা সুদাসলে ১৯ লাখে দাঁড়ায়। সুদের টাকা দিতে না পারায় গত বছরের ৬ মার্চ হাসানকে তুলে নিয়ে নিজ বাড়িতে আটকে রাখেন মাসুদ। তিনি হাসানকে নিজ বাসায় একমাসের বেশি সময় আটকে রাখেন। এনিয়ে নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম সদর থানায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপর দুইজন হচ্ছেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী রুমেল হক ও খলিলুর রহমান।

এ মামলা প্রথমে তদন্ত করেন গাইবান্ধা সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) সেরাজুল ইসলাম। পরে গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি ও বর্তমানে সুন্দরগঞ্জের কঞ্চিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মানষ রঞ্জন দাস দায়িত্ব পান। সর্বশেষ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ওসি ও বর্তমানে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুজ্জামান।
এদিকে ঘটনার বিচারের দাবিতে ব্যবসায়ী ‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’ গড়ে উঠে। বিচারের দাবিতে দুই মাস ব্যাপী আন্দোলন চলে। আন্দোলনের মুখে সদর থানার তৎকালীন ওসি মাহফুজার রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবর রহমান এবং উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেনকে অন্যত্র বদলি করা হয়। ঘটনার দিনই মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে রয়েছেন।

ঘটনার নয় মাস ছয়দিন পর মাসুদ ও খলিলুরের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর দুই দিন পর ১৮ জানুয়ারি বদলী হয়ে তিনি সুন্দরগঞ্জ থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। গাইবান্ধা কোর্ট পুলিশ ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে অভিযোগ পত্রটি সংশোধনের জন্য তদন্তকারি কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠান। পরে গত ৭ মার্চ মাসুদ রানাসহ তিন আসামিকেই অভিযুক্ত করে আদালতে সংশোধিত অভিযোগপত্র জমা দেন ওসি তৌহিদুজ্জামান। এর পরই ফোনালাপ শুরু হয় টাকা ফেরতের জন্য। এতেই ফোনালাপটি ফাস হয়ে ভাইরাল হয়। এব্যাপারে পুলিশের রংপুর রেঞ্চের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্যের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ওসি তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সর্বশেষ - বাংলাদেশ