রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিক খান সাদিদকে (২৫) পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সাদিদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা, ছাত্রলীগের সম্মানহানি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার ফরিদপুরের মধুখালী থানায় এক ব্যবসায়ীর সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বালিয়াকান্দি থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
সাদিদ বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মান্নান খানের ছেলে। তাঁর চাচা ফেরদৌস খান টুটুল উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। আরেক চাচা রাসেল খান রিজু উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। তাঁদের বাড়ি ইলিশকোল গ্রামে। তিনি সচ্ছল পরিবারের সন্তান। পড়ালেখা করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি পদ পেয়েই সাদিদ বেপরোয়া চলাচল শুরু করেন। মারধর, চাঁদা দাবিসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।
এলাকাবাসী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, সাদিদ ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজে পড়ালেখা করলেও তাঁকে পরিবারের রাজনীতির কারণে সভাপতির পদ দেওয়া হয়। পদ পাওয়ার পর থেকে এলাকায় চাঁদাবাজি, মারধর, প্রভাব বিস্তার, সালিস-দরবারসহ নানাভাবে অর্থ হাতাতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কামারখালী গড়াই সেতুর টোলঘর এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সোনা ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া কুমিল্লা থেকে বাসে চুয়াডাঙ্গায় সোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ আরো চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মধুখালী থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় রাতেই পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে। গত রবিবার সন্ধ্যায় বালিয়াকান্দি বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে সাদিদকে গ্রেপ্তার করে মধুখালী থানা পুলিশ।
সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর বলেন, ‘বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিক খান সাদিদ সোনার বার ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। গত সোমবার সকালে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়। দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে বিচারক কারাগারে পাঠিয়েছেন।’
বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম তুরান বলেন, ‘কারো অপরাধের দায় ছাত্রলীগ নেবে না। সে অপরাধী হলে তার সাজা তাকেই ভোগ করতে হবে।’