নির্বাচন কমিশন অবৈধ ঘোষণার পর প্রার্থিতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
গাজীপুর সিটির ভোটে মেয়র পদে প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাহাঙ্গীর আলমের দায়ের করা রিটটি সোমবার খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর ফলে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন তা বহাল থেকে গেল।
ঋণ খেলাপির দায়ে গত ৩০ এপ্রিল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।
মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঋণের জিম্মাদার হিসেবে জাহাঙ্গীরকে খেলাপি ঘোষণা দিয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পেতে গত বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতে রিট করেন জাহাঙ্গীর।
আয়তনে সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন গাজীপুরে ভোট হবে আগামী ২৫ মে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।
এক দশক আগে ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটির প্রথম ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন আজমত উল্লা খান। তখন দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়ে যান জাহাঙ্গীর।
দলের নির্দেশেও ভোট থেকে সরতে রাজি না হয়ে জাহাঙ্গীর কয়েকদিন নিখোঁজ থাকেন। ভোটের আগে গাজীপুরে ফিরে আমজত উল্লাকে সমর্থন দেন।
তবে ভোটের ব্যালটে জাহাঙ্গীরের নাম থেকেই যায়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গাজীপুরে বিএনপির প্রার্থীর কাছে হেরে যান নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা। তখন বিভিন্ন মহল থেকে ওই পরাজয়ের জন্য জাহাঙ্গীরকে দায়ী করা হয়েছিল।
এরপর ২০১৮ সালে আজমত উল্লা খানকে বাদ দিয়ে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়া হয় জাহাঙ্গীরের হাতে। সেই নির্বাচনে জাহাঙ্গীর জিতে মেয়র পদে বসলেও সুস্থিরভাবে চলতে পারেন নি।
বিতর্ক তার পিছু লেগেই ছিল। ২০২১ সালের নভেম্বরে বেফাঁস মন্তব্য করে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন।
অনিয়ম, দুর্নীতির নানা দায়ে মেয়র পদও খোয়ান জাহাঙ্গীর। এরপর দলে ভেড়ার জন্য নানা চেষ্টা-তদবির চালানোর পর অবশেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে দলে ফিরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ।
ভোটের তফসিল ঘোষণার পর গত ১৫ই এপ্রিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাজীপুরসহ পাঁচ সিটিতে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা করে।
জাহাঙ্গীরকে বাদ দিয়ে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় টঙ্গী পৌরসভার সাবেক মেয়রে প্রবীণ নেতা আজমত উল্লা খানকে।
এরপর জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। তার মা জায়েদা খাতুনও মনোনয়ন জমা দেন। জাহাঙ্গীরের মায়ের মনোনয়ন বৈধ হওয়ায় তিনি ভোটে মাঠের রয়েছেন।