ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নাটঘর ইউনিয়নের নাটঘর গ্রামে তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়।
নিহত দুজন হলেন নাটঘর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে এরশাদুল হক (৩০) এবং নাটঘর গ্রামের সন্তোষ সরকারের ছেলে বাদল সরকার (২৫)। এর মধ্যে বাদল সরকার গতকাল রাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরশাদুল হককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান। এরশাদুল হক যুবলীগের নেতা ছিলেন।বিজ্ঞাপন
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাটঘর গ্রামের আবু নাসের গোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের গোষ্ঠীর বিরোধ রয়েছে। এই ইউনিয়নে এখনো নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে এরশাদুল হক, স্থানীয় আবু নাসেরসহ কয়েকজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গতকাল রাতে বাদল সরকারকে নিয়ে নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর বাজারের পাশে ওয়াজ মাহফিলে যান এরশাদুল হক। সেখান থেকে তাঁরা মোটরসাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় দুর্বৃত্তরা এরশাদুল হক ও বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই বাদল মারা যান। গুরুতর আহত এরশাদুলকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় লোকজন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ঢাকা নেওয়ার পর এরশাদুল মারা যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আলী হায়দার আল রাজী ওসমানী বলেন, আহত এরশাদুলকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
নিহত এরশাদুলের চাচাতো ভাই হামিদুল হক বলেন, এরশাদুল, তাঁর বাবা আবুল কাশেম ও গ্রামের আবু নাসের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আবু নাসেরের এক ছেলে ও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন এরশাদুল ও বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে বাদল ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এ বিষয়ে নাটঘর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, স্থানীয় কুড়িঘর বাজারের পাশে ওয়াজ মাহফিল থেকে ফেরার পথে দুটি মোটরসাইকেল করে সাত থেকে আটজন দুর্বৃত্ত এরশাদ ও বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে বাদল ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং তাঁর ছেলে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ বলেন, রাস্তা ফাঁকা ছিল। রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা একা পেয়ে বাদল ও এরশাদুল হকের ওপর হামলা করে। বাদলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে না। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা চলছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।