দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় আক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার সকালে নিজ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেন, কাজেই তাদের ঠিক ওই মাটি ও মানুষের সাথে যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্কটা তাদের মাঝে নেই। তাদের কাছে ক্ষমতাটা ছিল একটা ভোগের জায়গা। সেই ক্ষেত্রে আসলে অপজিশন তাহলে কোথায়? এখানে একটা পলিটিক্যাল সমস্যা কিন্তু আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড থেকে যখন শোনায় যে এখানে ডেমোক্রেসি, পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি, ইলেকশন, হেনতেন; কিন্তু আসলে এখানে করবেটা কী, সেটাও তারা চিন্তা করে না।
গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলে অনেক দল দরকার- এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বে দেখলে আপনারা দেখবেন, সেখানে কিন্তু মাত্র দুই দল হয়ে গেছে এখন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুই দলের বেশি শক্তিশালী দল নাই।
নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মানুষের অনীহা দেখছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো জানি, আমেরিকার প্রায় ২৫ শতাংশ সংগঠন ইলেকশনই করে না। ইলেকশন করার বিষয়ে একটা অনীহা চলে আসে মানুষের। এটাও কিন্তু অনেক দেশে দেখা যাচ্ছে। আমাদের দেশটা ধীরে ধীরে ওরকম হয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির শাসনকাল তুলে ধরেন শেখ হাসিনা বলেন, পেছনে থেকে তাদেরকে উৎসাহ দিয়ে একবার ক্ষমতায় আনতে পারে, যেটা ২০০১ সালে এনেছিল। কিন্তু তার পরিণতি কী ছিল? বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, বাংলা ভাই সৃষ্টি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, ৫০০ জায়গায় একদিনে বোমা হামলা, আমাদের উপর গ্রেনেড হামলা, অপজিশনের অনেক নেতা-কর্মীদের উপর হামলা।
তিনি বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের উপর গ্রেনেড হামলা, কামরান মারা গেছে, তার ওপর দুই বার গ্রেনেড হামলা হল, হেলালের মিটিংয়ের উপর হামলা, সেখানে ৯ জন মারা গেল। এ রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সেই সময় সারা দেশজুড়ে। যার জন্য ইমার্জেন্সি।
আওয়ামী লীগ ‘মাটি ও মানুষের দল’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ একটা দল, যে দলটা সেই ১৯৪৯ সালে তৈরি। বিরোধী দল থেকে একেবারে সাধারণ মানুষকে নিয়ে এই দলটা গড়ে তোলা। এই সংগঠনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা এ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, রাষ্ট্রদূত-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমম্বয়ক জুয়েনা আজিজ এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গত তিন বছরের কাজের উপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।