বিশেষ প্রতিবেদক: আহসান আলী। ছিলেন দুদকের সাবেক ডিডি বা ডেপুটি ডিরেক্টর। জানাযায়, দূর্ণীতিসহ নানান অভিযোগে তাকে দুদক বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালেও এখনো তার অপকর্ম কমেনী। জানাযায়, আহসান আলী দূর্নীতির মাধ্যম কোটি কোটি টাকা আয় করে রাজধানীর সবচেয়ে ধন্যাঢ্য এলাকা নিকতুন্জ এক এ একটি প্লট ক্রয় করে সেখানে বিলাশ বহুল একটি অত্যাধুনিক একটি বাড়ি তৈরী করেন।নিকুন্জ এক এর রোড নাম্বার পাচ এর ৪৭ নাম্বার বাড়িটি দুদকের সাবেক দূর্ণিতবাজ ডেপুটি ডিরেক্টর আহসান আলীর। যিনি নিজে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা আয় করে এই প্রসাদসম বাড়ি তৈরী করেছেন। জানাযায়, আহসান আলীর বিরুদ্ধে দুদকের বিভাগিয় তদন্ত শুরু হলেও অজ্ঞাত কারনে সেই তদন্ত এখনো বন্ধ রয়েছে। খোজ নিয়ে জানাযায়, দুদকের দূণীতিবাজ সাবেক এই কর্মকর্তা বর্তমানে নিজেকে দুদকের পরিচালক দাবী করে প্রতারনার মাধ্যমে নিরিহ লোকদের কাছ থেকে হুমকিধামকি দিয়ে অবৈধ পথে টাকা আয় করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভুগি জানায় আহসান আলী তার গুলশানের ১১ নাম্বার রোডের অফিসে যেয়ে তাকে দুদক মারফত হেনস্তা করা হবে বলে এখনো প্রতিমাসে লাখ টাকা চাদা আদায় করছেন। কোনো মাসে দিতে দেরী হলে আহসান আলী নিজে ভুক্তভুগির গুলশানের সেই অফিসে যেয়ে দুদক মারফত মামলা করা হবে বলে হুমকি দিয়ে জোর পূর্বক টাকা আদায় করছেন। ভুক্তভুগি জানান আহসান আলীর এই প্রতারনা শুধু একজন ভুক্তভুগি নয় এমন বহু ব্যবসায়ী এবং মানুষকে দুদকের ভয়ভীতি দেখিয়ে আহসান াালী টাকা আদায় করে যাচ্ছেন।
নিকুজ্ঞ একের বাড়ি মালিক সমিতির এক সদস্য জানান এমন এক দূর্ণীতিবাজ লোক আহসান আলী কি করে নিকুন্জের মত জায়গায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রসাদসম অট্টালিকা তৈরী করলো তা কারো বোধোগম্য নয়। কারন এত অল্প বেতনের চাকুরি করে দূর্ণীতি ছাড়া প্রাসাদসম অট্টালিকা তৈরী সম্ভব নয় । তিনি বলেন, নিকুজ্জ এলাকার নিরিহ বাড়ি মালিকদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে কথিত দুদক কর্মকর্তা আহসান আলী দুদকের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন নিরিহ নিকুজ্জ বাসিদের কাছ থেকে। যারা টাকা দিতে অস্বীকার করছেন তাদেরকে আহসান আলী তার দুদকের পরিচিতি বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তাদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেস্টা করছেন।
খোজ নিয়ে জানাযায় ২০১৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিতর্কিত দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয় সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ২০১৪ সালের ১১ মে সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসানের স্বাক্ষরিত পৃথক দুই প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আহসান আলী ও পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শফিকুর ইসলামকে বাধ্যতামূলক এ অবসর প্রদান করা হয়।
সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের ০৩/২০১৪ নম্বর সভায় দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই উপপরিচালকের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাঁদের বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং যেহেতু উক্ত সিদ্ধান্ত সরকারের অনুমোদনের জন্য কমিশন কর্তৃক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রেরণ করা হয় এবং যেহেতু সরকার জনস্বার্থে তাদের চাকরি হতে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন বলে বিবেচনা করেন সেহেতু গণকর্মচারী (অবসর) আইন ১৯৭৪ এর ৯ (২) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার তাদের দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকরি থেকে অবসর প্রদান করে যার মধ্যে আহসার আলী ছিলেন অন্যতম দূর্ণীতিবাজ।
খোজ নিয়ে আরো জানাযায় যশোরের বেনাপোলে কাস্টমস কমিশনারকে হুমকি ও দুদক থেকে নোটিশ চুরি করে তথ্য বদলে বিভিন্ন দফতরে সরবরাহের অভিযোগে সাবেক দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে বেনাপোল পোর্ট থানায় সেই সময় মামলা করেন কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জিএম আশরাফুল আলম। অভিযুক্ত হন দুদকের সাবেক ডেপুটি ডিরেক্টর। আহসান আলী
কদিন পরে এক সংবাদ সম্মেলনে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জিএম আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্ত আহসান আলী ৩১টি চালানে দুই কোটি দুই লাখ ৩৪ হাজার ৭০৮ টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য মোবাইলে কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীকে চাপ প্রয়োগ করে। এমনকি ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর কমিশনারের অফিসে এসে তাকে হুমকি দেন। এছাড়া দুদক, এনবিআরসহ বিভিন্ন দফতরে বেনামী অভিযোগপত্র জমা দেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করেন যে বেনাপোল বন্দরে দুইশ কেজি ও আড়াই হাজার মেট্রিক টন ভায়াগ্রার দুটি চালান উদ্ধারের সঙ্গে সাবেক ওই দুদক কর্মকর্তার যোগসূত্র পাওয়া গেছে। আহসান আলীর এসব কর্মকাণ্ডে বেনাপোল বন্দরে আটশ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়।
বেনাপোল কাস্টমসের এ কর্মকর্তা বলেন, আহসান আলীর অন্যায় আবদার, বেনামী অভিযোগ, হুমকির কারণে কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীর মানহানি হয়েছে, কাস্টমসের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে, রাজস্ব আহরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বেনাপোল পোর্ট থানা ওসি মামুন খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তাছাড়া অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে এভাবেই ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টাসহ অনিয়ম ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসান আলী এবং শফিকুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন দুদকের একটি সূত্র।