আলেম-ওলামা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
‘আজকে আমাদের একটা মাত্র দাবি দুই দিনের মধ্যে সব আলেম, রাজনৈতিক কর্মীসহ, খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় আপনারা তৈরি হন, ১০ হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করব। ওঁদের জামিন ছাড়া এবার হাইকোর্টে কোনো জামাত হবে না।’
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। ‘হয়রানিমূলক মামলায় রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের দীর্ঘ কারাবাস: নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে গণমতামত কেন্দ্র।
কারাবন্দী হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ আলেম–ওলামাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘মামুনুল হকের আইনি অধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাঁর পরিবারকে গত ১৫ মাসে একবার দেখা করতে দেওয়া হয়েছে। মামুনুল হকসহ অন্য আলেমদের তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া জালেমের কাজ।’
সরকারপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হাজি সেলিমকে প্যারালে মুক্তি দিতে পারেন, কিন্তু খালেদা জিয়াকে পদ্মা ব্রিজ দেখতে দিতে পারেন না। তাহলে আপনাদের বিচার কোথায়?’
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.)সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানকে ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডের পাথর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ৫০ বছরে এ সংবিধানে এত বেশি কাটাছেঁড়া হয়েছে যে মানুষের মনের চাহিদা, আইনের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি আলেম-ওলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এই মুক্তির জন্য লড়াইকে যত দূর নেওয়া উচিত, আমি তত দূর পর্যন্ত যেতেও রাজি আছি।’
মান্না বলেন, ‘দিনের ভোট আগের রাতে ডাকাতি করছেন। এটা কি ইসলামের পক্ষের কাজ? এর চেয়ে ইসলামবিরোধী কাজ কী হতে পারে। যিনি এই ইসলামবিরোধী কাজ করছেন, তাঁকে আবার আপনারা অনুরোধ করবেন।’
সরকার সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক বলেন, ‘আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি না থাকার কারণে তারা রিল্যাক্সে পার পেৃয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে যখন ডাক আসবে, পরিস্থিতি তৈরি হবে, আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে থাকব।’
গণমতামত কেন্দ্রের প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ শামসউদ্দিনের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত বক্তব্য দেন গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা আইনজীবী মহসিন রশিদ, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাংবাদিক নেতা ও বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, আইনজীবী গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী বিপ্লব কুমার পোদ্দার, গণমতামত কেন্দ্রের সমন্বয়ক মোর্শেদ সিদ্দকী প্রমুখ।