আজ ৭ এপ্রিল। ৫০ বছর আগে ১৯৭৩ সালের এই দিনে বসেছিল জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে এই সংসদ গঠিত হয়েছিল।
প্রথম সংসদ গঠনের মাধ্যমে দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের যাত্রা শুরু হয়। তবে বছর দুয়েক পর রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির শাসনব্যবস্থায় ফিরে যায় দেশ। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর সামরিক শাসনে ব্যাহত হয় গণতন্ত্রের যাত্রা। প্রথমে জিয়াউর রহমান এবং পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশে সামরিক তন্ত্র কায়েম করেন। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৯৯১ সালে দেশে আবার সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু হয়। এর পর থেকে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা চলছে। তবে মাঝে ২০০৭ সাল থেকে প্রায় দুই বছর দেশে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল।
দেশে তিন দশক ধরে সংসদীয় ব্যবস্থা বহাল থাকলেও জবাবদিহি ও সুশাসন কতটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। গণতন্ত্রের চর্চা কতটা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও রয়েছে।
জাতীয় সংসদের ৫০ বছরে সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়েছে ১৭ বার। এসব সংশোধনী নিয়েও বিভিন্ন সময় তর্কবিতর্ক আছে। প্রথম সংসদেই সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে চারবার। শুধু সপ্তম সংসদে (১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল) কোনো সংশোধনী আনা হয়নি।
প্রথম সংসদে ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই সংবিধানের প্রথম সংশোধনী বিল পাস হয়েছিল। এই সংশোধনী আনা হয়েছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল, তাদের বিচারের জন্য আইন তৈরি করা এবং তা কার্যকর করতে সংবিধানের প্রথম সংশোধনী আনা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম সংসদে সংবিধানের এই সংশোধনী এনেছিল।
জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আহ্বানে বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল।
বিশেষ অধিবেশনটি চলতি একাদশ সংসদের ২২তম এবং চলতি বছরের দ্বিতীয় অধিবেশন। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি চলতি বছরের প্রথম তথা ২১তম অধিবেশন শুরু হয়ে শেষ হয় ৯ ফেব্রুয়ারি। ওই অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ২৬টি। যেখানে ১৯টি বিল উত্থাপিত হয়। এর মধ্যে বিল পাস হয় ১০টি। এছাড়া একটি অধ্যাদেশও উত্থাপিত হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের যাত্রা থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত ঐতিহাসিক বিভিন্ন অর্জনসমূহ তুলে ধরা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণগুলো প্রচার করা হবে। সংসদ সদস্যরা বিশেষ অধিবেশনে সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আলোচনা করবেন।